Ads 468x60px

বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১০

বিজয়ের দিনে প্রতিজ্ঞা

আজ বিজয় দিবস। মহান বিজয় দিবস। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি দেশের বিজয়ের দিন। আজ আমাদের উচ্ছ্বাসের দিন, আজ আমাদের সেই কৃতী সন্তানদের কথা স্মরণ করার দিন। যাদের আত্নত্যাগে আমরা পেয়েছি নিজের একটি দেশ, মাতৃভাষায় কথা বলার ও চর্চা করার অবাধ স্বাধীনতা। সেই দিনে কলুষিত মনকে বিশুদ্ধ করার শপথ করি। মনের যত জঞ্জাল সব পরিষ্কার করে বিশুদ্ধ জীবন যাপনের প্রতিজ্ঞা করার উপযুক্ত সময় হতে পারে আজই।

আসুন, ঝেড়ে ফেলি সকল ময়লা-আবর্জনা, শুধু ঘর থেকেই নয় মন থেকেও। আজকে শপথ করি আর কখনো মিথ্যা বলবো না, প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করবো যার দ্বারা অপর উপকৃত হবে। সময় নষ্ট করবো না অপ্রয়োজনীয় কাজে, সৃজনশীল কিছু করবো। মানুষকে সৎ উপদেশ, পরামর্শ দেব। স্ব স্ব ধর্মানুযায়ী চলে জীবনটাকে আত্মিক প্রশান্তি দিতে সচেষ্ট হব। অকারণে প্রাণী হত্যা করবো না, কেউ অতিথি পাখি বিক্রি করলে তাকে অন্য জীবিকার উপায় বাতলে দেব। দেশের ট্রাফিক আইন মেনে চলবো, বৃদ্ধ, অসুস্থদের রাস্তা পারে সহায়তা করবো। সর্বোপরি দেশের উন্নয়নে চেষ্টা করে যাব।

পাশাপাশি নিজের টেকি জীবনকে জঞ্জালমুক্ত করবো।  যে কম্পিউটার চালাচ্ছি সেখান থেকে অবৈধ অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশান ফেলে দেয়ার এটাই হতে পারে উপযুক্ত সময়। আর কারো কাছে চোর উপাধি পেতে রাজি নই, এ চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে সবাইকে। তবেই না ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের চেহারা ফুটে উঠবে সকলের কাছে।

সর্বোপরি বাংলা ভাষার শুদ্ধ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য সচেষ্ট হই, আজই হোক এ যাত্রার প্রথম দিন।

শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১০

শাহরুখ খানের কনসার্ট ও নিজস্ব মত

আমি নিজেকে বাংলাদেশী বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। এর কয়েকটি কারণ হতে পারে। এক, আমার জন্ম স্বাধীন বাংলাদেশে তাই জন্মভূমির প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা; দুই, একাত্তরের রক্তক্ষয়ী ইতিহাস দেশের প্রতি মমত্ববোধ বহুগুণ বাড়িয়েছে; তিন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কারণ তা হলো আমার ভাষা। বাংলায় আমি যেভাবে কথা বলতে পারি অন্য কোন ভাষায় তা পরিনা। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ভালো ইংরেজী শিখতে পারা সৌভাগ্যের ব্যপার। আমি নিজেকে সেসব সৌভাগ্যবানদের একজন মনে করিনা এবং আমার ইংরেজীও অতোটা সমৃদ্ধ নয়। এসব বলার প্রেক্ষাপট ১০ ডিসেম্বর বৈশাখী টিভিতে হওয়া কিং খান কনসার্ট।

গত কয়েকদিন ধরে চলা শাহরুখ খানের কনসার্টের খবরে কান, চোখ বিরক্ত হলেও একটা আগ্রহবোধ আমার মধ্যে কাজ করছিল। শাহরুখ বাইরের দেশে কনসার্টে যা করে তা কি এখানেও করবে ? সেটা জানার কৌতুহল এবং কিঞ্চিৎ হলেও অনুষ্ঠান কেমন হয় তা দেখার আগ্রহে বৈশাখী টিভির সামনে বসি। আমি ভারতের অন্যান্য অ্যাওয়ার্ড শো দেখেছি (অবশ্যই টিভিতে), তাই তারা (রানী, ইশা, অর্জুন) কেমন পারফর্ম করবে তা অজানা ছিল না। অনুষ্ঠান শুরু করতে দেরী হওয়া, কুমার বিশ্বজিৎ ও শাকিব খানের অনুষ্ঠানে অংশ না নেয়া ছিল প্রত্যাশিত। এদেশে ঠিক সময়ে যে কিছুই হয় না। একসময় অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং নাচ শুরু করেন শেফালি জারিওয়ালা। এই মেয়ে কিছু বছর আগে 'কাঁটা লাগা' নামক হিন্দী মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে মিডিয়ায় আসে। বলে রাখি সেসময় আমি নিয়মিত হিন্দী মুভি, মিউজিক ভিডিও দেখতাম। এরপর এই মেয়ে আর কি করেছে জানি না। শেফালির পোষাকে অশালীন কিছু পাইনি, যদিও অনেকে হয়তো সুড়সুড়ি অনুভব করতে পারেন। অবাক কান্ড হলো ম্যালাইকা অরোরা খানের মূল গান 'মুন্নি বদনাম'-এও অশালীনতা খুঁজে পাইনি। এরপর একে একে এলো ইশা কোপিকার, অর্জুন রামপাল, রানী মুখার্জি। তারা অন্যান্য শো-তে যা করে এখানেও তাই করলো। রানীর পোষাকতো আরেকটি শো-তে করা তার পারফর্ম্যান্সের পোষাক। রানীর মুখে বাংলা শুনে আগত অনেক দর্শক বিমোহিত হয়ে গেল। লক্ষ্য করলাম তার বাংলায় কিছুটা আড়ষ্টতা, হয়তো হিন্দীময় পরিবেশে থাকার কুফল। এরপর দেবাশীষ বিশ্বাস শুরু করলেন শাহরুখ বন্দনা। মানুষের অষ্টম ধর্মের নাম নাকি শাহরুখ খান (!!!)। তিনি মঞ্চ কাঁপাতে আসছেন, দেবাশীষ তাকে দেখেছেন এবং নিজে ধন্য হয়েছেন। এখন দর্শকও তাকে দেখে ধন্য হবেন। এলেন শাহরুখ, নাচলেন তার হিট গানে। উন্মত্ত দর্শক নাচলেন, শাহরুখে সাথে থাকা স্বল্পবসনা নৃত্য শিল্পীদের দেখে চোখ জুড়ালেন। আর আমি বিব্রত বোধ করলাম টিভির সামনে বসেই। এরপর বোম্বে ভাইকিংস খ্যাত নীরাজ শ্রীধর কিছু হিন্দী গান গাইলেন। সময় কাটানো আর কি, সাথে ছিল লাল রঙের প্যান্ট পরিহিত নীরাজের লঙ্ফ-ঝম্ফ। মন্দ হয়নি দর্শককে বাঁদর নাচানো। এরপর আবার শাহরুখ এবং আমার গল্পেরও শুরু এখানে।

শাহরুখ সচরাচর যা করেন, অর্থাৎ দর্শককে মঞ্চে ডাকেন মজা করার জন্য। এখানেও তাই করলেন। এক যুগলকে ডাকলেন রোমান্সের গুরু রোমান্স শেখাবেন বলে। খুশিতে গদগদ হয়ে যুগল মঞ্চে উঠলেন, বিশেষ করে রমণীর খুশি যেন বাঁধ ভাঙছিল। শাহরুখ বলে কথা। মঞ্চে শাহরুখ তাদের ভালোবাসা শেখালেন, মেয়েটিকে চুমো খেলেন (ছেলেটিও বাদ থাকবে কেন ?)। কিছু ফান করে ছেড়ে দেয়ার আগে আবদার জানালেন অনেকগুলো বাচ্চা জন্ম দেয়ার; তার নাইট রাইডার যে মেয়েদের মতো খেলছে, তাদের জন্য কিছু খেলোয়াড় দরকার! মেয়েটিও খুশিতে আত্মহারা এসবে। খান সাহেব শালা বলেও গালিগালাজ করলেন তাদের, যা সে ছেলেটি শিখিয়ে দিয়েছিল। দেখলাম, আরেকবার বিব্রত হলাম।

এরপর এলো আরো দুই জন। একজন হিন্দী, বাংলা ছাড়া কিছুই জানেন না। অন্যজন আবার এক ধাপ উপরে, তিনি বাংলা ভালো জানলেও ইংরেজীতে সমস্যা এবং হিন্দী ঘৃণা করেন। তিনি আবার শাহরুখের জন্য আনা বোতল থেকে পানিও খেলেন, শাহরুখকে হিরু হিরু বলে জানালেন শাহরুখের বাংলা জানা জরুরী। শাহরুখ ভদ্রলোকের অবস্থা বুঝে বৌয়ের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। এবার যিনি এলেন তার ইংরেজী আরো করুণ। এক রাশিয়ান তরুণীকে নিয়ে পর্বে তিনি যে বাক্য ছাড়লেন তা দেখে যে কেউ লজ্জা পাবে। আমি তার কথায় যতোটা না লজ্জিত হয়েছি তার চেয়ে বেশী হয়েছি সে তরুণীর পোশাক দেখে। তার অন্তর্বাস দেখা যাচ্ছিল এবং তা দেখানোর জন্যই কিনা সে একটা ভঙ্গিমা করলো। হায় বাঙালী, টাকা দিয়ে এসব দেখে। এদের পরের জন আবার স্বপ্ন দেখেছিল শাহরুখের সাথে সাক্ষাতের, তার স্বপ্ন সেদিন পূরণ হলো। সে আবার আব্দার করলো তার ভাইকে আনার জন্য। শাহরুখ তা এড়িয়ে গেল, তারপর নাচানাচি করার সময়ও ফিল্মে কাজ করার আব্দার। এবারও খান সাহেবের না। এরপর শাহরুখ বিশ্রাম নিয়ে আবার নাচানাচি করলেন সবাইকে (অন্যান্য সহশিল্পীদের) নিয়ে। তার বিশ্রামের সময় নীরাজ আবার এসেছিলেন এবং টুইস্ট গেয়ে বানর নাচ দেখিয়েছিলেন।

কোটি কোটি টাকা খরচ করে আমরা কি দেখলাম ? বিনোদন, দুই ঘন্টার বিনোদন। যাতে ছিল কুরুচিকর অঙ্গভঙ্গি, ভাষার অপব্যবহার, অশালীন পোষাকের প্রদর্শনী। কোটি টাকা দিয়ে আমরা এই কিনলাম ? আবার অনেকে হাজার টাকা এমনকি লাখ টাকা খরচ করে হলেও শাহরুখের কনসার্টে গিয়েছেন। টিভি পর্দায় একজন উৎসুক অভিনেত্রীকে শাহরুখের সাথে নাচানাচি করার আকুলতা দেখেছি, দেখেছি সমাজের গণ্যমান্য অনেককেই। যে মাসে আমাদের দেশ বিজয় অর্জন করলো সে মাসে আমরা বিজাতীয় সংস্কৃতি আমদানী করেছি। তাদের নাচন দেখে হাততালি দিয়েছি, হিন্দী গানের তালে মাথা দেহ সবই নাচিয়েছি। অকাতরে ঢেলে দিয়েছি হাঁড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরে উপার্জিত টাকা, স্রেফ কয়েক মিনিটের নাচ-গান দেখার জন্য। আখেরে লাভ হলো কার ? যারা শাহরুখকে দেখলাম তাদের নাকি শাহরুখের ? মাত্র কয়েক ঘন্টার মূল্য যে এত কোটি টাকা তা কয়জন স্বপ্নে ভেবেছিল ? যার টাকা আছে সে খরচ করবেই, আমাদের কি। শুনেছি খান সাহেব নাকি দুই কোটি টাকা পেয়ে শো শেষে এক পরিবারের জন্মদিনের পার্টিতেও গিয়েছিলেন।

সেলুকাস সাহেবকে টানবো না, নিজেই দীর্ঘশ্বাস ফেলি আর বলি বাঙালির শিক্ষা হবে কবে ? শিক্ষার দরকার নাই, যাদের টিভিতে হিন্দী সিরিয়াল, গায়ে হিন্দী ছবির নায়িকার নামে পোষাক, নাম হিন্দী ছবির নায়কের নামে তাদের কাছ থেকে আর কীইবা প্রত্যাশা করা যায় ? সময়ের অপচয় করলাম, আমার সময় অনুষ্ঠান দেখে, আপনার সময় এ লেখা পড়িয়ে।

দু:খিত।

রবিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১০

শাহরুখ খানের শো ও আমাদের কিং খান

সন্ধ্যা রাতে লিখতে বসলাম একটা বিষয় মনের ভিতর খচখচ করছে তাই। কদিন পত্র-পত্রিকায়, রাস্তার বিলবোর্ডে ভারতের সিনেমার এক নায়কের পোস্টার শোভা পাচ্ছে। টিভিতে আসছে বিজ্ঞাপন। তিনি শাহরুখ খান। বাংলাদেশে আসবেন, ধন্য করবেন আমাদের। আমরা তাকে দেখব, নিজের গায়ে চিমটি কেটে বলবো “এই যা, স্বপ্ন দেখছি না......উমা এ যে শাহরুখ.........”। তিনি কিং খান, বলিউড বাদশা।

হলিউডের আদলে ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাণস্থলের নাম দেয়া হয়েছে বলিউড, নকল প্রিয় বাঙালী এটাও রপ্ত করেছে। এফডিসি হয়েছে ঢালিউড। শুধু তাই নয়, নায়কদের নামেও রয়েছে বলিউডের প্রভাব। ছোটকালে দেখেছি সালমান শাহ, আমিন খান একটু বড় হয়ে দেখলাম শাকিল খান, তরুণ কালে দেখলাম শাকিব খান। ঢালিউড খানে খান খান। এর মধ্যে সালমান খানের নামে টিভি নাটকের ইমন হয়ে যায় সালমান শাহ। এখন আবার নায়কের বড্ড অভাব। কোন নায়ক নাকি হিট, সুপার হিট ছবি উপহার দিতে পারে না। যা পারে তা হলো ফ্লপ, সুপার ফ্লপ। একজন আবার ব্যতিক্রম। তিনিও খান, আমাদের শাহরুখ খান। নাম তার শাকিব খান। আবার ক্রিকেটার সাকিব নয়, উচ্চারণে ও বানানে পার্থক্য থাকলেও অলস আমরা অনেকেই দুটোই “শ” উচ্চারণ করি। যেন “বিশ” ও “বিষ”। তো সেই শাকিব খান নাকি যে ছবিতে থাকবেন সেটা হিট, ভাববেন না আমি বাংলা সিনেমার পোকা। সবই পত্রিকায় দেখা, টিভির চকচকে লিপস্টিক মাখা উপস্থাপিকার মিষ্টি কণ্ঠে শোনা। এই শাকিব খান আমাদের একটা বিশাল জনগোষ্ঠীকে বিনোদন দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি সপ্তায় মনে হয় তার ছবি মুক্তি পায়। সেই খান আবার নিজের নামে ছবিও করেছেন, নাম্বার ওয়ান শাকিব খান। কি কাকতালীয়, শাহরুখ খানও ছবি করেছেন “মাই নেম ইজ খান”। তো এই খান সাহেব শাহরুখ বাংলাদেশে আসবেন, আর্মি স্টেডিয়াম মাতাবেন। সাথে থাকবেন রানী মুখার্জি, ইশা কোপিকার, অর্জুন রামপাল প্রমুখ। এতদিন যাদের টিভির পর্দায়, কম্পিউটারের মনিটরে কিংবা ম্যাগাজিন কভারে দেখা গেছে তারাই স্বশরীরে আসছেন, এটা অনেক ভক্তের কাছে জীবনের সেরা প্রাপ্তি। আমিও হয়তো বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসতাম, শাহরুখকে দেখার জন্য নয়। ক্যামেরার সদ্ব্যবহার করার জন্য, সাথে রানী-ইশারা থাকতো বোনাস। টিকেটের দামও সবার জন্য নয়, সর্বনিম্ন যে দাম তা দিয়ে স্টেডিয়ামের কোণায় বসতে হবে। কাছে বসতে চাইলে লাখ পেরুবে, তাই ঐ ইচ্ছাটা দমন করেছি। টিভির পর্দায় দেখতে হবে শাহরুখকে নিয়ে বাঙালীর উন্মাদনা। কি লিখতে যেয়ে কি লিখছি। শাকিবের প্রসঙ্গে ফেরৎ আসি। ভদ্রলোক আমাদের একমাত্র কিং খান। তিনি শো করলে সেটা হিট, টিভিতে আসলে উপস্থাপিকার সামনের সারির দাঁতের প্রদর্শনী দেখে মনে হয় টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন। সেই শাকিব খান শো করবেন আরেক খান শাহরুখের সাথে। সেটা ভেবে অনেকেই পুলকিত, আনন্দিত, শিহরিত হয়েছিলেন। তাদের স্বপ্নে কিক মেরে (ইনসেপশন ছবির মতো) বাস্তবে নিয়ে এসেছেন আয়োজকরা। শাহরুখ খান নাকি শাকিবের সাথে পারফর্ম করবেন না। শাকিব আলাদা নাচবেন, টাইম পাস করার জন্য। ভারতের অন্যান্য শোতে যা হয়, ঐশ্বরিয়ার নৃত্যের আগে সময় পার করার জন্য বিপাশা বসুরা নাচেন। এমনটি এখানেও হচ্ছে, পার্থক্য বড় রাজার আগে ছোট রাজার আগমন ঘটবে। বিষয়টা আমার কাছে কেমন যেন লাগছে। কি দরকার হিন্দী নাচানাচির অনুষ্ঠানে আমাদের জনপ্রিয় তারকাদের এনে ছোট করার ? যারা পারফর্ম করবেন তারা এভাবে না ভাবলেও আমি ভাবছি। শাহরুখ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাইরের কারো সাথে তিনি পারফর্ম করবেন না। তাহলে কেন শাকিব খান, কুমার বিশ্বজিৎদের এখানে ডেকে আনা। নিজেদের সংস্কৃতি এভাবে বিসর্জন দিতে হবে ? কথা আর ঘুরিয়ে লাভ নেই, যা হবার হবে। আমরাও শাকিবকে নাহয় টাইম পাস পারফর্মার হিসেবে দেখব। আর দেখতে দেখতে একবারও ভাববো না রাস্তার ধারে শীতের রাতে নগ্ন গায়ে শুয়ে থাকা শিশুটার কথা, টিকেটের টাকা দিয়ে এরকম কত শিশুর মুখে হাসি ফুটাতে পারতাম সে কথা। দরকার কি, নিজের সুখ আগে, দুই দিনের দুনিয়া। আমোদ-ফূর্তি করার সময় পেরিয়ে যাচ্ছে না!

শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১০

উবুন্টু-ফেডোরা রিলিজ পার্টি রিভিউ

লিনাক্সগুরুদের সাথে পরিচিত হবার যে শখ ছিল সেটা গত আড্ডায় কিছুটা মিটলেও কোথায় যেন একটা ঘাটতি ছিল। শাহরিয়ার ভাই (সামনে ভাই বলবো না, আমরা এক্স এআইইউবি গ্রাজুয়েট এবং কাছাকাছি দুটো ব্যাচ), রাসেল ভাই, এঞ্জেল ভাই, শামীম ভাই প্রমূখের সাথে ভালো করে পরিচিত হবার দরকার ছিল। আজ সেটা হয়ে গেল উবুন্টু-ফেডোরা রিলিজ পার্টিতে। অনুষ্ঠান তিনটায় শুরু হলেও আমি যেতে যেতে প্রায় সাড়ে তিনটা। রাস্তায় জ্যাম ছিল, যা অগ্রাহ্য করার ইচ্ছা থাকলেও উপায় ছিল না। তাই এ দেরী। দেখা হলো অনুপম ভাইয়ের সাথে, তারপর শাবাব ভাই, রাসেল ভাই, শাহরিয়ার, আকরাম ভাই, অসহায় ভাই (জীবন চৌধুরী) ও আরো অনেকের সাথে। কুশল বিনিময় চলার ফাঁকে এল চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ইত্যাদি। সবাই চাচ্ছিল টি-শার্ট নিতে, কিন্তু অনাকাঙ্খিত দেরী হচ্ছিল। আলাপ ও খাওয়া দুটো একসাথেই চলছিল। রাসেল ভাই ব্যস্ত ছিলেন ছবি তোলায়। আমিও এক ফাঁকে তুললাম কিছু ছবি। নিজে অনুপস্থিত, রাসেল ভাইয়ের ছবিতে থাকতে পারি। এবার এলেন লিফোর মডু শামীম ভাই। তিনি এইচপি নেটবুক নিয়েছেন, সেটার সুবিধা-অসুবিধার লেকচার দিলেন আমাদের। আমরাও বাধ্য ছাত্রের মতো শুনলাম। শাবাব ভাই পরামর্শ চাইলেন নেটবুক সম্বন্ধে, এসার ভালো না ডেল না এইচপি এটা নিয়ে তিনি যথেষ্ঠ সন্দিহান। শামীম ভাই কি বলেছিলেন তা শোনার আগে অন্যদিকে চলে যাই। আকরাম ভাইয়ের সাথে পরিচয় হলো। তিনি ফটোশপ ইনস্টল করতে চাচ্ছেন, আমিও কি করা যায় পরামর্শ দিলাম। এরই মধ্যে চলে এল টি-শার্ট, ডিজাইন করেছেন অভ্রনীলদা। দুটো রঙ (সাদা ও কালো) ছিল, আমি দুটোই নিলাম। সব মিলিয়ে পাঁচটা নিলাম। বাসায় এসে দেখলাম চারটিই দিয়ে দিতে হবে। কাল এ্যামিগোজে যেয়ে আরো কটি নিতে হবে। যাই হোক এরপর কেক কাটা হলো, খাওয়া হলো। রাসেল ভাই ছবি তুললেন, অনেকেই তুললেন। তারপর একে একে অতিথিরা বিদায় নিতে শুরু করলেন, আমিও সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। সাথে এল অনিক, আমার বাসার পথেই ওর বাসা তাই নিয়ে নিলাম গাড়ীতে। অনিক আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটিতে ইইই পড়ছে ২য় বর্ষে। মোদ্দা কথা ভালো একটা পার্টি হলো। আরিব্বাস আসল কথাই বলিনি। এটা হয়েছিল HFC তে, রাপা প্লাজায়। ওহহো আরেকজনের সাথে দেখা হয়েছে, শাহরিয়ারের হবু বউ মানে আমাদের ভাবীর সাথে।

শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১০

আশরাফুলের কান্না ও কিছু বাস্তবতা

খবর পড়লাম আশরাফুল নাকি আজকের ম্যাচ শেষে কেঁদেছে। তার টিমমেটরাই সেটা জানিয়েছে সাংবাদিকদের। দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে বোতল-তোয়ালে টানাটানির কাজ করেছে আশরাফুল। এটা নিয়ে অনেকেই দেখলাম ব্যথিত। আশরাফুলের জায়গায় আমি থাকলেও হয়তো বিব্রত বোধ করতাম। আমি বিষয়টা অন্যভাবে দেখতে চাই।

নিউজিল্যান্ডের সাথে সফল একটা সিরিজ শেষ করে তামিম আসলেও দলে জায়গা পাবে এটা আশা করেছিল শাহরিয়ার নাফিস। নির্বাচকরা তখন কূটচালে ব্যস্ত কি করে আশরাফুলকে দলে রাখা যায়। তারা এশিয়ান গেমসে আশরাফুলকে নেতা করে পাঠাল। ভুলে গেল টি-২০ তে অন্যতম সফল খেলোয়াড় অলোক কাপালীর কথা। জাতীয় দলে জুনায়েদ-রকিবুলও থাকবে আবার আশরাফুলও থাকবে। বলির পাঁঠা বানানো হলো একটা ম্যাচও না খেলতে দেয়া জহুরুল ইসলাম অমি ও সফল ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিসকে। সমালোচনা এড়াতে দল প্রকাশ করা হলো বিলম্বে। তবুও সমালোচনা হলো এবং মাথা মোটা নির্বাচকরা নির্বিকার থাকতেই পছন্দ করলেন।

কেউ কি ভেবেছেন নাফিস, অমির হৃদয় চিরে আসা দু:খবোধের কথা ? কিংবা বারবার আশায় থাকা অলোক কাপালীর একটু সুযোগ না পাওয়ার বেদনার কথা ? তাদের কান্না পত্রিকায় আসে না, আসে আশরাফুলের কান্নার সংবাদ। অথচ কি এমন গড় এই আশরাফুলের ? নির্বাচকরা কি করে শাহরিয়ার নাফিসের মতো জিম্বাবুয়ের সাথে ৬২ গড় থাকা ব্যাটসম্যানকে বাদ দেয় ?

আমার মনে পড়ছে আকরাম - বুলবুলের কথা। তারা নির্বাচকদের ভালোবাসা কখনো পাননি। কিংবা দুর্জয়, নান্নু। সময় বড় নিষ্ঠুর। সে সময়ের কাছে ধরা খেয়ে যাচ্ছে আশরাফুল - মাশরাফি। বর্তমান বড় কঠিন, নির্বোধ ব্যাটিং কিংবা ধারহীন বোলিং দিয়ে দলে টিকে থাকা বড়ই কঠিন। হয়তো সময় হয়েছে এদের বিদায়ের, তবে তা যেন হয় সাময়িক। রফিক, পাইলটদের মতো যেন আশরাফুল- মাশরাফির করুণ বিদায় না হয়। তবে বিশ্বকাপের দলে আশরাফুলকে দেখতে চাই না। মাশরাফি থাকুক, ও আশরাফুলের মতো এতো বাজে পারফরম্যান্স দেখাবে না, এই বিশ্বাস আমার আছে।

বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১০

ছবিতে বর্ডার যোগ করা

ফটোশপকে এককালে মনে করতাম সবচেয়ে সেরা ফটো এডিটিং টুল। গিম্পকে মনে হতো বাচ্চা পোলাপানের জন্য বানানো কিছু। সময় পাল্টেছে, এখন আমি লিনাক্স ইউজার। ফটোশপকেও তাই দিয়েছি বিদায়। ঐ বাচ্চা পোলাপানের মনে করা গিম্পই এখন আমার অন্যতম প্রিয় অ্যাপ্লিকেশান। ওয়েবে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে নিজেই কয়েকটি লিখেছি বিভিন্ন ফোরামে। আজকেও আরেকটি লিখব। বেশ সহজ একটি টিউটো। কি করে ছবিতে বর্ডার দেয়া যায় তা। অনেকে জানেন, আবার অনেকে জানেন না। যারা জানেন না তাদের জন্যই এ লেখা।

প্রথমেই যে ছবিতে বর্ডার দেবেন সেটা গিম্প দিয়ে ওপেন করে নিন।

Free Image Hosting at www.ImageShack.us

নতুন একটি  ট্রান্সপারেন্ট লেয়ার খুলুন, আমি নাম দিলাম "border"।
Free Image Hosting at www.ImageShack.us
বর্ডার লেয়ার সিলেক্ট থাকা অবস্থায় Shift + b চেপে বাকেট টুল সিলেক্ট করুন। লেয়ারটি ফিলআপ করে দিন যে রঙের বর্ডার দেবেন সে রঙে (আমি দিলাম কালো)।
Free Image Hosting at www.ImageShack.us
Free Image Hosting at www.ImageShack.us

Ctrl + a চেপে বর্ডার লেয়ারটি সিলেক্ট করুন। তারপর Select -> Shrink এ গিয়ে ভ্যালু দিন (আমি দিলাম ২)। OK চেপে বেরিয়ে আসুন।
Free Image Hosting at www.ImageShack.us

এবার কিবোর্ডের Del বাটনটি চেপে দেখুন কি সুন্দর কালো বর্ডার দেখা যাচ্ছে।

Free Image Hosting at www.ImageShack.us

Ctrl + shift + s চেপে ফাইলটি সেভ করে নিন (.png or .xcf)।

ব্যস, হয়ে গেল বর্ডার।

Like us on Facebook