Ads 468x60px

শনিবার, ২৮ জুলাই, ২০১২

লেখক হুমায়ূন আহমেদ বনাম ব্যক্তি হুমায়ূন


আমি অত্যন্ত সাধারন এক পাঠক, অনিয়মিত পাঠক। নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকে পড়া হয় বছরে একবার। বইমেলার সময়। বাকি সময় পরলে ল্যাপটপের মনিটরে চোখ রেখে (কিন্ডল ফায়ার কেনার শখ হয়নি কখনো)। সেরকম একজন পাঠক হিসেবে হুমায়ূন আহমেদের মত জনপ্রিয় সাহিত্যিকের সমালোচনা আমার সাজে না। আমি করতেও চাই না। যা চাই তা হলো নিজের কিছু কথা বলতে।

হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের সাহিত্যে স্মরণীয় নাম হয়ে থাকবেন তার সৃষ্টিশীল সাহিত্যের জন্য। তার গল্পে ফুটে উঠতো সাধারন পরিবারের কথা, বেকার প্রেমিকের কথা, পরিস্থিতির চাপে পড়া যুবকের কথা। কিংবা সদ্য তরুণী হওয়া মেয়ের কথা। তার ভাষা ছিল ঝরঝরে। এত সহজ ভাষা যা পড়ে মনে হতো, আরে এমন লেখা আমিও লিখতে পারি। সেরকম সাহিত্যিক ছিলেন তিনি। সেই মানুষটা চলচ্চিত্র পরিচালনায় এসে নিজের সাহিত্যকর্মের বারোটা বাজাতে শুরু করলেন। তার জীবনের শেষ দশ বছরে অধিকাংশ উপন্যাস পরিণত হয়েছে অপন্যাসে। কথাটা অনেকে স্বীকার করবেন। তবুও কিছু ভাল লেখা এই সময়ে পাওয়া গেছে। যেমন – মধ্যাহ্ন, মাতাল হাওয়া, জোছনা ও জননীর গল্প ইত্যাদি। তবে তার ভাল লেখাগুলো সত্তর থেকে নব্বই এই তিন দশকের মধ্যে লেখা। মিসির আলী, হিমু, শুভ্র এই তিনটি চরিত্রের জন্ম এই সময়ে। মিসির আলী চরিত্রের জন্ম তিনি যখন আমেরিকায় পিএইচডি করছেন তখন। দেবী, নিশিথীনি নামক দুটো উপন্যাসের মাধ্যমে নতুন এক চরিত্রের জন্ম হয় বাংলা সাহিত্যে। মিসির আলী। পরবর্তীতে হিমুর উত্থান ঘটে ময়ূরাক্ষী উপন্যাসে। সুন্দর, সুদর্শন শুভ্রের দেখা পাওয়া যায় নব্বইয়ের শুরুতে। হুমায়ূনের নাটক লেখার দক্ষতায় ততোদিনে বোকা বাক্সের দর্শক দেখে ফেলেছে এই সব দিনরাত্রি, বহুব্রীহি, অয়োময়, কোথাও কেউ নেই, নক্ষত্রের রাত, আজ রবিবারের মতো নাটক। ঈদের অনুষ্ঠানও তার নাটক ছাড়া জমতো না।
 
হুমায়ূন আহমেদ তার পরিবার নিয়ে সুখী ছিলেন। অন্তত বাইরে থেকে তাই মনে হতো। কিন্তু তার সংসারেও যে আগুন জ্বলছিল তা কে জানতো। তিন মেয়ে, এক ছেলে আর মায়াবতী স্ত্রী নিয়ে সংসার তার। নব্বই দশকের শেষের দিকে তার মেঝো মেয়ের বান্ধবী কিশোরী শাওনের সাথে তিনি জড়িয়ে পড়েন অনৈতিক সম্পর্কে। নূহাশপল্লী নামক বাগানবাড়ীতে প্রায় চার বছর লিভ টুগেদার করেন শাওনের সাথে। তখনও তার প্রথম স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়নি। মিডিয়ায় সব প্রকাশ হয়ে পড়ায়, শাওনের পরিবারের চাপে পড়ে ৩০ বছরের সংসার একটা স্বাক্ষরে তছনছ করে দিলেন হুমায়ূন। সেই শুরু। তার লেখা নাটক, গল্প, উপন্যাস হয়ে পড়তে লাগলো রসহীন, স্বস্তা। আমি নিজেই তার নাটকের দর্শক ছিলাম, কিন্তু শেষের দিকে আগের সেই মজা পাচ্ছিলাম না। গল্পগুলোও কেন যেন জমাট বাঁধাতে পারেননি হুমায়ূন আহমেদ। হয়তো নৈতিক স্খলনের সাথে সাথে তার লেখক স্বত্তার অপমৃত্যু ঘটেছিল। সাথে ছিল প্রকাশকদের চাপ, ঈদের নাটক, ঈদ সংখ্যার গল্প-উপন্যাস, বইমেলায় বেস্ট সেলার হওয়ার আকাঙ্খা। এত চাপের পাশে ছিল (হয়তো) পারিবারিক চাপ। যে চাপ তাকে বইতে হয়েছে জীবনের শেষ দশকে। সবার সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হতে ক্যান্সার নামক মরণব্যাধীতে আক্রান্ত হলেন হুমায়ূন। জীবনও শেষ হলো তার এই রোগের চিকিৎসাকালীন সময়ে।


আমি তার সমালোচনা করতে চাই না। এসব তার জীবনে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনার কিছু মাত্র। মানুষটার মৃত্যু হয়েছে। তিনি কোন সমালোচনার জবাব দিতে পারবেন না। অনেকের জীবনে অন্ধকার দিক থাকে, আবার শাদা-আলোকিত দিকও থাকে। হুমায়ূন আহমেদের উজ্জ্বল অধ্যায় তার সাহিত্যকর্মের প্রথম তিরিশ বছর। যখন তার পাশে ছিলেন প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন খান (আহমেদ)। আমরা তার সেই কাজগুলোর জন্য তাকে সম্মান জানাই, কি দরকার তার জীবনের কলুষিত অধ্যায়গুলো ঘাঁটার? এসব কাদা বেশি ঘাঁটালে যে শ্রদ্ধাটুকু তাকে করছি সেটুকোও যে তিনি হারিয়ে বসতে পারেন। সে খেয়াল কি আছে তার “ক্রেজি” ভক্তদের ?

সোমবার, ২৩ জুলাই, ২০১২

কিছু স্মৃতি এবং হুমায়ূন আহমেদ


আজকের লেখাটা আরো কয়দিন আগে লেখা উচিৎ ছিল। হয়ে ওঠেনি। জীবিকার তাগিদে করা চাকরি, সময় বের করতে না পারা, নানারকম অজুহাত দেয়া যায়। আজ একদিন ছুটি পেলাম। লেখার সুযোগ। এটা অনেকটা স্মৃতিকথা জাতীয় প্রবন্ধ হবে। আমার ছেলেবেলায় লেখালেখির শুরু, বর্তমানে যা ব্লগে রূপ নিয়েছে তার ইতিকথা বলতে যাচ্ছি।
হুমায়ূন আহমেদ, বাংলাদেশে এরকম জনপ্রিয় লেখক আমি দেখিনি। নিন্দুকেরা বলেন তার লেখা একঘেঁয়ে। বাজারী লেখা, ঐতিহাসিক কোন মূল্য এসব লেখার থাকবে না। কথাটা আমি ঠিক তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছি না। আবার স্বীকারও করছি না। মধ্যবর্তী পথ অবলম্বন করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আমি কি বুদ্ধিমান ? নাহ, নিজেকে নিয়ে সে অহঙ্কার নেই।
ছেলেবেলায় বাবা বই কিনে দিত। ইন্ডিয়ান লেখকদের ভূতের গল্প প্রাধান্য পেত। পাশাপাশি ছিল কিশোর পত্রিকা, কিশোর তারকালোক ইত্যাদি। সেবার তিন গোয়েন্দাও ছিল আমার পাঠ্য বইয়ের তালিকায়। স্কুলের টেক্সটবুক বাবা পড়িয়ে দিত, এছাড়া সেগুলোর কাছেও যেতাম না। বাবা নিজের জন্য কিনতো হুমায়ূন আহমেদের বই। শক্ত মলাটের সেই বই আমিও পড়ে ফেলতে শুরু করি। ওমা, এ যে অন্য অনুভূতি। প্রথম হুমায়ূন আহমেদের কি বই পড়েছিলাম আজ আর মনে পড়ে না। সেই ১৯৯৩ সালের কথা। টিভিতে দেখা অয়োময় ধারাবাহিকের সুবাদে হুমায়ূন আহমেদ তখন আমার জন্য অচেনা কেউ নয়। এরপর সে সময় কোথাও কেউ নেই ধারাবাহিক দেখে এই লেখকের প্রতি ভাললাগা বেড়ে যায়। আর ছিল তার প্রাঞ্জল ভাষায় রচিত উপন্যাস। হিমু, শুভ্র, রূপা এরা যেন আমাদের আশে-পাশের মানুষ। ওদের অস্তিত্ব টের পেতে শুরু করলাম। স্কুলের জন্য কেনা ছোট খাতায় লেখা শুরু করলাম। আমার লেখা সে গল্প (বা উপন্যাস) আবর্তিত হয়েছিল হায়দার নামক এক চরিত্রকে দিয়ে। টগর, ফুলি আরো কি কি যেন চরিত্র ছিল। ঠিক যেমন হুমায়ূন আহমেদ লিখতেন। বাবা-মা বেশ গর্ববোধ করেছিল ছেলের এ প্রতিভায় (!)। হিমু পড়ে লেখা শুরু করি অদ্ভূতুড়ে চরিত্রের ভিতু। যে চরিত্র অনেকটা হিমুর মতো। পাগলাটে, ক্ষ্যাপা। আম্মুর ডায়েরির পাতায় লিখতে থাকি শিশু মনের ভাবনাগুলো। সেই শুরু সেই শেষ। পড়ালেখার চাপে, কম্পিউটার-স্যাটেলাইটের আগমনে দূরে সরে যেতে থাকি লেখালেখির ভূবন হতে। বইয়ের ভূবনও বলা চলে। মাঝে মাঝে পড়তাম তিন গোয়েন্দা, তাও আবার জৌলুশ হারিয়ে ফেলতে শুরু করে। ধীরে ধীরে কমে যেতে লাগলো আগ্রহ। কম্পিউটার গেমসে সময় কাটতে লাগলো।
ইন্টার দিয়ে কিছু সময় পেলাম। সে সময় শুরু হলো নতুন করে হুমায়ূন আহমেদের বই পড়া। কয়েকটি বই পড়ে নিলাম। মনে ধরলো কুটু মিয়া বইটি। ভার্সিটির শুরুতেও পড়া চলতে লাগলো। বিশেষ করে মধ্যাহ্ন বইটা পড়ে খুব ভাল লাগলো। হুমায়ূন আহমেদের অসামান্য সৃষ্টি। সময়কে যেভাবে ধরে রাখার প্রয়াস, এমন লেখা তেমন দেখিনি। হয়তো আছে, না পড়তে পারা আমার ব্যর্থতা। মধ্যাহ্নের দ্বিতীয় খন্ডেও দেখলাম মুগ্ধতা। এরপরে আর তার লেখা তেমন পড়া হয়নি, বা যেগুলো পড়েছি সেগুলো দাগ কাটেনি মনে।
আজ হঠাৎ এসব লেখার কারণ সে মানুষটি নিজে। হুমায়ূন আহমেদ, যিনি নয় মাস কোলন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে হার মেনেছেন এক অজানা ভাইরাসের কাছে। ২০১১ সালে তার ক্যান্সার হয়, ২০১২ সালে জীবনের পরিসমাপ্তি। মাঝের এক বছর তিলে তিলে মানতে শুরু করেছি একদিন হুমায়ূন আহমেদ চলে যাবেন। অমোঘ এই সত্য এত তাড়াতাড়ি চলে আসবে ভাবিনি। ভেবেছিলাম লোকটা আরো কটা দিন বাঁচবেন। লিখবেন মিসির আলী, হিমুদের নিয়ে মধ্যবিত্তের টানা-পোড়েনের গল্প। হয়নি। তার শেষ একটা লাইন লেখার ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর মুহূর্তে। কি সেই লাইন তা আর জানা হলো না। উচ্চ মানের ঘুমের ঔষধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা অবস্থায় তিনি ছেড়ে গেলেন পৃথিবী। পূরণ হলো না তার শেষ শখ, লেখক হিসেবে অবসর নেয়ার সাধ।
জীবন বড়ই বিচিত্র, তার রহস্য ভেদ করা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। 

বুধবার, ১১ জুলাই, ২০১২

ফুজিৎসু ল্যাপটপে টাচপ্যাড সমস্যার সমাধান: ওপেনসুয্যে


অবশেষে সফলতার মুখ দেখলাম। লিনাক্সে টাচপ্যাড নিয়ে ঝামেলা পাকানো ল্যাপিটাকে (Fujitsu LH531) ঠিক করলাম। উবুন্টুতে ঠিক করে কাজ চালিয়েছিলাম। এখন সফল হলাম ওপেনসুয্যেতেও। কিভাবে কি করলাম দেখে নেয়া যাক।

Yast → Boot Loader এ ক্লিক করলে নিচের মত ছবি আসবে। দেখতে হবে ওপেনসুয্যের এন্ট্রি সিলেক্ট করা আছে কিনা। এরপর Edit বাটনে ক্লিক করতে হবে।

নতুন উইন্ডো খুলবে, তার শেষে Optional Kernel Command Line Parameter এর শেষে i8042.notimeout i8042.nomux যুক্ত করতে হবে। ছবিতে সবুজ কালিতে মার্ক করা।


এরপর সেভ করে বেরিয়ে আসতে হবে। এরপর রিস্টার্ট করলে টাচপ্যাড খুঁজে পাবে ওপেনসুয্যে।

বিকল্প
প্রথমে কনসোল বা টার্মিনাল খুলে নিচের কমান্ড দিতে হবে।

kdesu kwrite /boot/grub/menu.lst

তারপর পাসওয়ার্ড দিলে একটা ফাইল খুলবে। সেখানে ওপেনসুয্যের এন্ট্রি খুঁজে নিয়ে নিচের লাইন যোগ করে দিতে হবে সবার শেষে।

i8042.notimeout i8042.nomux

এরপর সেভ করে বেরিয়ে আসতে হবে। রিস্টার্টের পর টাচপ্যাড কাজ করবে। ‌

মঙ্গলবার, ১০ জুলাই, ২০১২

ওপেনস্যুযেতে কেডিই আপগ্রেড


প্রায় দুই মাস চালানোর পর প্রিসাইজ প্যাঙ্গলিনকে টা টা জানিয়েছি। আমার একমাত্র ল্যাপিতে উইন্ডোজ সেভেনের পাশাপাশি এখন চলছে ওপেনস্যুযে ১২.১। আবার সেই কেডিই, তবে এবার স্ট্যাবল ডিস্ট্রোতে। ইনস্টল সেরে কিছু দরকারী কাজ করতে হয়, সেগুলো করে অপেক্ষায় ছিলাম কি করে কেডিই আপগ্রেড করবো। গতকাল রাতে নেটের অবস্থা ভাল ছিল না। ডাউনলোড করা সম্ভব হয়নি, ব্রাউজিং হয়েছে ঢিমেতালে। সকালে নেট স্পিড দারুণ পেলাম, কিন্তু ক্লাস নিতে হবে সোয়া দশটায়। তাই একটু কনফিউজড ছিলাম কি করবো ভেবে। নয়া কেডিইর লোভ সামলাতে না পেরে সকালেই আপডেট দিয়ে দিলাম। আমার ৭৬৮ কেবিপিএস লাইনে দারুণ গতিতে আপডেট নামতে লাগলো। প্রায় ৩৭১ মেগা ডাউনলোড করা কি সহজ কাজ? সাড়ে নয়টায়ও যখন কাজ শেষ হয়নি, তখন ল্যাপি চালু রেখেই ক্লাশের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। ক্লাশ শেষ করে এসে দেখি আপডেট হয়ে গেছে। আরেকটু ঘষামাজা করে সব ঠিক করে নিলাম। এখন লেটেস্ট কেডিই চালাচ্ছি ওপেনস্যুযেতে।

যেভাবে কেডিই আপডেট করলাম:

Yast -> Software Repositories এ গিয়ে নিচের দুটো রিপো যোগ করতে হবে। সেগুলো এনাবল ও অটো রিফ্রেশেবল করে নিতে হবে।

http://download.opensuse.org/repositories/KDE:/Release:/48/openSUSE_12.1/
http://download.opensuse.org/repositories/KDE:/Extra/KDE_Release_48_openSUSE_12.1/


অত:পর konsole খুলে নিচের কমান্ড।

zypper dup

ব্যস, আপডেট শুরু হবে। সময় কত লাগবে  তা নির্ভর করবে ইন্টারনেট স্পিডের উপর। স্পিড কম হলে আপনি একটা ঘুমও দিয়ে আসতে পারেন। কিংবা প্রয়োজনীয় শপিংটাও সেরে নিতে পারেন এই ফাঁকে।

Like us on Facebook