Ads 468x60px

বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১২

লিব্রে অফিসের গতি বাড়ানোর তরিকা


আজকাল আমরা অনেক সচেতন। পাইরেসি না করে হলে গিয়ে ছবি দেখছি, অডিও সিডি কিনে গান শুনছি এমনকি উইন্ডোজ কিনতে না পারলে লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম চালাচ্ছি। অফিসিয়াল কাজে মাইক্রোসফট অফিসের ব্যবহার কমাতে সহায়তা করছি, কারন এত দাম দিয়ে অফিস স্যুট কেনার পয়সা সবার নেই। অফিসের বিকল্পের মধ্যে লিব্রেঅফিস অন্যতম। আমিও একজন এমএস অফিস ব্যবহারকারী, পাশাপাশি লিব্রেটাও ব্যবহার করছি। লিব্রে ব্যবহারকারীর একটা অভিযোগ থাকে এটা বড্ড স্লো, লোড হতে সময় লাগছে। মানছি লিব্রে স্লো, তাকে দ্রুত লোড করারও তো তরিকা আছে। ওটা না দেখেই হুট করে এসব মন্তব্য করা কি ঠিক ?

আসুন দেখি কি করে লিব্রে অফিস নামক ফ্রী অফিস স্যুট আরো কম সময়ে খুলতে পারা যায়।

শুরুতেই লিব্রে অফিস বা লিব্রে রাইটার খুলুন। টুলস হয়ে অপশানে যান। লিব্রে অফিসের নিচে লেখা মেমরীতে ক্লিক করুন। একটা নতুন পর্দা আসবে। সেটায় নিচের মত সেটাপ দিন।

  • আনডু স্টেপসের সংখ্যা দিন ২০।
  • গ্রাফিক্স ক্যাশে লিব্রে অফিসের জন্য ১২৮ মেগা বাইট ও প্রত্যেকটা অবজেক্টের জন্য ২০ মেগাবাইট নির্ধারন করে দিন।
  • অবজেক্টের সংখ্যা দিন ২০।
  • কুইক স্টার্টারে টিক চিহ্ণ দিতে ভুলবেন না যেন।

এবার ওকে চেপে অ্যাপ্লিকেশন রিস্টার্ট দিন। কি, লোড হওয়ার সময় কমেছে না ? এরপরে নিশ্চয় লিব্রে স্লো অপবাদ শুনতে হবে না ?  

রবিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১২

দেখে এলাম স্কাইফল



জেমস বন্ডের আগের সেই জৌলুশ আর নেই। সহকারী নারী এজেন্টের গুলি খেয়ে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে নদীতে পড়ে যায় মিস্টার বন্ড। এদিকে মৃত বন্ডের শোক ভুলতে না ভুলতেই ছয়জন এজেন্টকে হারায় এমআই সিক্স। কিংকর্তব্যবিমূঢ় এমের সামনে হঠাৎ হাজির হয় বন্ড। মাতাল, দুর্বল জেমস বন্ডকে বাধ্য হয়ে নতুন মিশন দিতে রাজি হয় এম। সবগুলো টেস্টে ফেল করা বন্ড মিথ্যাকে সত্য ভেবে নতুন উদ্যোমে শুরু করে তার মিশন। মিশনে তার সাথী হয় তাকে গুলি করা সেই এজেন্ট। শারীরিকভাবে অক্ষম, মানসিকভাবে শক্ত বন্ড ছুটে চলে ভয়ঙ্কর ভিলেন সিলভার সন্ধানে। একটা ওয়ালথার পিপিকে যা আবার বন্ড ছাড়া কেউ আনলক করতে পারবেনা হলো কিউর দেয়া তার একমাত্র গ্যাজেট।

এতক্ষণ যা বললাম তা হলো সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া জেমস বন্ড সিরিজের নতুন ছবি 'স্কাইফল' – এর কাহিনীর সারসংক্ষেপ। গত ৮ই ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে দেখে এলাম ছবিটি। ছবিতে একশানের অভাব নেই, গ্যাজেট দেখা যায়নি আগের মতো। পুরনো কিউকে মিস করেছি। বন্ডকে মানবিক রূপ দেয়ার চেষ্টা খুব যে সফল হয়েছে বলা যাবে না। তবে অভিনেতা ডেনিয়েল ক্রেইগ চেষ্টা করেছেন তার সেরাটা দিতে। ছবিতে কিছু অযৌক্তিক দৃশ্য ছিল, মাথা না খাটিয়ে দেখলে সেটা ধর্তব্যের বিষয় না। 


বন্ড গার্ল বেরিনিস মার্লোহ'র সাথে বন্ডের দৃশ্য জমেনি, তার চরিত্রের ব্যপ্তি হতাশা বাড়িয়েছে। ভিলেন চরিত্রে জেভিয়ার বার্ডেম মানিয়ে গেছেন, তাকে দেখলেই 'নো কান্ট্রি ফর দ্য ওল্ড ম্যান' ছবির শীতল মস্তিষ্কের সেই খুনীর কথা মনে পড়ে। এম চরিত্রে জুডি ডেঞ্চ বরাবরই ভালো। 

 
ছবির শেষে একটা টুইস্ট আছে বন্ডের বস বিষয়ক, আর আগমন ঘটে মিস মনিপেনির। ঠিক যেন প্রথম বন্ড ছবির আগের পর্ব। হঠাৎ বুকে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছিল, পঞ্চাশ বছর আগের শ্যন কনারিকে যদি বর্তমানের হাই ফাই গ্যাজেটে সমৃদ্ধ বন্ডরূপে দেখা যেত !

শ্যন কনারীকে তো আর সেভাবে দেখা যাবে না, তবে পিয়ার্স ব্রসনানকে নিয়ে আরেকটা বন্ড করা যেত। ডেনিয়েল ক্রেইগের জায়গায় ব্রসনান থাকলে আমি নিশ্চিত ছবি আরো জমতো। আদর্শ আধুনিক বন্ড বলতে পিয়ার্স ব্রসনানের চেহারাই ভেসে ওঠে চোখের পর্দায়, আফসোস নির্মাতারা বয়সের অযুহাতে অন্যতম সেরা বন্ডকে অকালে শেষ করে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে হয়তো ব্রসনানকে ছাড়িয়ে যাবেন নতুন কোন অভিনেতা।

মুভিটি দেখতে পারেন, তবে খুব আশা নিয়ে দেখলে হতাশ হবেন। যদি এটি বন্ড সিরিজের মুভি না হয়ে সাধারন একশান মুভি হতো তাহলে দর্শকপ্রিয় হতো কিনা সন্দেহ হয়। শুধুমাত্র বন্ড ট্যাগের জন্য স্কাইফল দেখা যায়, আর ফরাসী সুন্দরী বেরিনিস মার্লোহ'র জন্য। তাছাড়া বড় পর্দায় একশান মুভি দেখার মজা নেয়ার জন্যও দেখা যায় স্কাইফল। বিদেশী মুভি দেখার চেয়ে আমি পরামর্শ দেব দেশীয় মুভি দেখুন। স্টার সিনেপ্লেক্সেই চলছে রেদোয়ান রনির “চোরাবালি”; স্কাইফল না দেখে রনির ছবি দেখলে হতাশ হবেন না। অন্তত দেশীয় চলচ্চিত্রকে চোরাবালিতে ডুবে মরতে না দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করলে ক্ষতি কি ?

সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১২

মুভি রিভিউ: কাহানী (২০১২)


ঈদের ছুটি ভালই কাটছে। মুভি দেখছি, নামাচ্ছি, টুইটারে টুইট করছি, মাঝে মাঝে ফেবুতে ঢুঁ মারছি। লেখালেখি বড্ড কম হয়ে যাচ্ছে। যা লিখছি তাও আবার লিনাক্স নিয়ে। কাঁহাতক সহ্য করা যায় এইসব টেকি প্যানপ্যানানি। তাই সাবজেক্ট পাল্টানোর চেষ্টা করছি। মুভি রিভিউ লিখার ব্যর্থ চেষ্টা। সবাই তো লিখছে, আমিও নাহয় এই ফাঁকে কয়েকটা রিভিউ লিখে ফেলি। যা দেখি তার লিখলে তো হবে না, যেগুলো ভাল লাগে সেগুলোর লিখতে হবে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ লিখছি বলিউডের ছবি “কাহানী” নিয়ে।


কাহানী ছবিটির চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন সুজয় ঘোষ। মুক্তি পেয়েছে ২০১২ সালের মার্চ মাসে। প্রায় দেড় মিলিয়ন ডলার বাজেটের ছবিটি বক্স অফিস থেকে আয় করেছে প্রায় কুড়ি মিলিয়ন ডলার। ব্যবসাসফল ছবি বলতেই হয়। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডার্টি পিকচার, পরীনিতা খ্যাত বিদ্যা বালান, কলকাতার পরিচিত মুখ পরমব্রত চক্রবর্তী, নওয়াজুদ্দীন সিদ্দিকী, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত প্রমুখ।

ছবির শুরুতে দেখা যায় ব্যস্ত শহর কলকাতার মেট্র রেল কম্পার্টমেন্টে বিষাক্ত গ্যাস আক্রমণ হয় যাতে মারা যায় অনেক যাত্রী। আসল গল্প শুরু হয় তার দুই বছর পরে। কলকাতায় হাজির হয় এক লন্ডন প্রবাসী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বিদ্যা বাগচী (বিদ্যা বালান), যে প্রেগন্যান্ট অবস্থায় খুঁজতে এসেছে তার হারানো স্বামীকে। যার নাম অর্ণব বাগচী, যিনি কাজ করতেন ন্যাশনাল ডাটা সেন্টারে (NDC)। বিদ্যাকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসে তরুণ পুলিশ অফিসার রানা সিনহা (পরমব্রত চক্রবর্তী)। দেখা যায় অর্ণব নামে কেউ এনডিসিতে কাজ করেনি, কিংবা যে হোটেলের কথা বিদ্যা বলছিল সে হোটেলও ওঠেনি সে নামের কেউ। বিদ্যার দৃঢ় বিশ্বাস অর্ণব বাগচী এখানে এসেছিল। রানার সহায়তায় বিদ্যা সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজতে শুরু করে অর্ণবকে। 


বিদ্যার এ কাজে বাধা হিসেবে আসে পেশাদার খুনী বব (শ্বাশ্বত চ্যাটার্জী)। ববের চোখ ফাঁকি দিয়ে, এনডিসির টপ লেভেলের বাধা উপেক্ষা করে বিদ্যা নিজের মত করে খুঁজতে থাকে অর্ণবকে, রানাও তাকে সহায়তা করে যথেষ্ট। এবার হাজির হয় আইবি কর্মকর্তা খান। কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে আসে সাপ। জানা যায় অর্ণবের মতো দেখতে মিলন বাগচী (ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত) নামের একজন এনডিসিতে কাজ করতো, যে কিনা জড়িত ছিল দুই বছর পূর্বের সেই সন্ত্রাসী হামলার সাথে। তার তথ্য পেলে অর্ণবকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। খান শুরুতে বিদ্যাকে না করলেও বিদ্যার একাগ্রতার কাছে হার মেনে তাকে সহায়তা করতে রাজি হয়। দূর্গা পূজার উৎসবময় নগরীতে এনডিসির শীর্ষ স্থানীয় এক কর্মকর্তার সন্ত্রাসী গ্রুপের সাথে সম্পর্কের তথ্য বের করে ফেলে বিদ্যা। জনবহুল শহরে দুর্ঘটনাক্রমে খুন হয়ে যায় সে কর্মকর্তা, খানের শেষ ক্লু নষ্ট হয়ে যায়। বিদ্যা দমে যায় না, সে এগিয়ে যায়। দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের দিন মিলন বাগচী দেখা করতে চায় বিদ্যার সাথে। বিদ্যা পুলিশকে না জানিয়ে দেখা করতে যায় মিলনের সাথে, আশা তার স্বামীকে পাওয়া যাবে।


এখানেই বেরিয়ে আসে সত্য। বিদ্যার হাতে খুন হয় মিলন বাগচী, বিদ্যার স্বামী অরূপ বসু দুই বছর আগের গ্যাস হামলায় মৃত্যুবরণ করেছিল। তখন বিদ্যার পেটে থাকা বাচ্চাও নষ্ট হয়ে যায়। সেই বিদ্যা মিলন দামজীকে খুঁজতে এসেছিল, ফাঁদ পেতেছিল পুলিশকে বোকা বানিয়ে। আইবি অফিসার খান বোকা বনে যায়, রানা সব বুঝতে পারে। বিদ্যাও অদৃশ্য হয়ে যায় লাল পাড়ের সাদা শাড়ী পরা অসংখ্য রমণীর ভিড়ে ব্যস্ত শহর কলকাতায় দূর্গা পূজার রাতে।

বলিউডের ছবি মানে একই ফর্মূলা, নাচ-গান-মারামারি। সে হিসাবে কাহানী ব্যতিক্রম। ছবিতে মাসালাদার কোন গান নেই, নেই কোন মারমার কাটকাট একশান। আছে দূর্দান্ত অভিনয়, প্লট ও টুইস্ট। একই ধাঁচের বলিউডি ছবি দেখে দেখে যারা বিরক্ত তার ভিন্ন ধাঁচের ছবিটি দেখে আনন্দ পাবেন নিশ্চয়ই। গর্ভবতী মহিলার চরিত্রে বিদ্যা বালান অসাধারন অভিনয় করেছেন। পরমব্রতও ভাল করেছে, অন্যান্য কাস্টিংও ভাল ছিল। খান চরিতে নওয়াজুদ্দীন সিদ্দীকি ছিলেন সাবলীল। বব বিশ্বাসরূপী কলকাতার শক্তিমান অভিনেতা প্রয়াত শুভেন্দু চ্যাটার্জীর ছেলে শ্বাশ্বত চ্যাটার্জী দারুণ মানিয়েছেন। অনেকদিন পর কোন বলিউডি মুভি দেখে ভাল লাগল। শোনা যায় বিদ্যাকে ভেবেই নাকি ছবির গল্প সাজিয়েছিলেন নাট্যকার। তিনি সফল, বিদ্যার ক্যারিয়ারে আরেকটি হিট জমা হলো। সমালোচকদের কাছেও যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছে কাহানী। বিদ্যা যে ন্য়াশনাল এওয়ার্ড পাওয়ার দিকে এগিয়ে গেলেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি ফুজি ফিল্ম এওয়ার্ড জিতেছে কাহানী। আইএমডিবিতে রেটিং পেয়েছে আট দশমিক দুই, বলিউড হাঙ্গামার রেটিং চার, টাইমস অব ইন্ডিয়ার রেটিং সাড়ে চার, রোটেন টম্যাটোর দর্শক জরিপে একানব্বই শতাংশ রেটিং পেয়েছে কাহানী।


বিদ্যা বালানও ছবির প্রচারণায় তার বিদ্যা বাগচী ক্যারেক্টারকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন শপিং মলে, সিনেমা হলে, রেস্তোরায় বিদ্যা বাগচী সেজে প্রচারণা চালিয়েছেন। বিদ্যা যে শতভাগ সফল বলা যায়।

সুজয় ঘোষ তো পরিকল্পনা আঁটছেন বিদ্যা বাগচীকে নিয়ে তিনি সিরিজ করবেন, সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা তার অনুপ্রেরণা। সাউথ ইন্ডিয়ায় ছবিটির রিমেক হচ্ছে, আগামী বছর জানুয়ারিতে মুক্তি পেতে পারে। আর কাহানী-'র স্ক্রিপ্টের কাজ এগিয়ে চলেছে, আগামী বছরই মুক্তি পেতে পারে কাহানী-২।

তো আর দেরী কেন, দেখতে বসে যান বিদ্যা বালানের “কাহানী”।

শুক্রবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১২

উইন্ডোজ ইনস্টলের পর ওপেনসুয্যে ১২.২'র গ্রাব রিস্টোর

ওপেনসুয্যে ইনস্টল করার পরে উইন্ডোজ ইনস্টল করলে ওপেনসুয্যেকে বুটের সময় খুঁজে পাওয়া যায় না। খুব সহজে আমরা গ্রাব রিস্টোর করতে পারি। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন ওপেনসুয্যে ১২.২ গ্রাব-২ ব্যবহার করছে।

প্রথমে ওপেনসুয্যের ডিভিডি দিয়ে পিসি বুট করতে হবে। বুটের পর বিভিন্ন অপশানে মধ্যে রেসকিউ অপশানটি সিলেক্ট করতে হবে। লগইন অপশান এলে রুট লিখে এন্টার দিন। পাসওয়ার্ড দিতে হবে না, শুধু এন্টার চাপবেন।
login: root
password:
এরপর fdisk –l লিখে দেখে নিন পার্টিশান লিস্ট। কোন ডিস্কে লিনাক্স আছে ভাল করে দেখুন।
লিনাক্স পার্টিশান মাউন্ট করুন (আমার ক্ষেত্রে ছিল sda8) এবং পরের কমান্ডে অন্যান্য ডিস্ক মাউন্ট করুন।
mount /dev/sda8 /mnt
mount –-bind /dev /mnt/dev
অত:পর নিচের কমান্ড দিয়ে রেসকিউতে প্রবেশ করুন।
chroot /mnt
রেসকিউতে সফলভাবে প্রবেশের পর গ্রাব ইনস্টল করে নিন।
grub2-install /dev/sda
exit
reboot
রিবুটের পর দেখুন ওপেনসুয্যের বুটলোডার চলে এসেছে।

রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১২

ফুজিৎসু ল্যাপটপে টাচপ্যাড সক্রিয়করণ (ওপেনসুয্যে ১২.২)


ওপেনসুয্যে ইনস্টল করার পর আমার ফুজিৎসু ল্যাপটপে টাচপ্যাড পাওয়া যায় না। সেটা এনাবল করার একটা উপায় পেয়েছিলাম। সেটা নতুন ভার্সনে খাটাতে গিয়ে দেখলাম কিঞ্চিৎ পার্থক্য আছে। তো দেখা যাক কি কি করলাম টাচপ্যাড সক্রিয় করার জন্য।

শুরুতে কিকঅফ মেনুতে গিয়ে Yast → System → Boot Loader এ ক্লিক করলাম।


নতুন যে উইন্ডো আসবে সেখানে Boot Loader Option এ ক্লিক করে আরেকটি উইন্ডো খুললাম।


নতুন উইন্ডোর Optional Kernel Command Line Parameter – এর শেষে নিচের লাইনটি যুক্ত করে দিলাম।

i8042.notimeout i8042.nomux


এরপর Ok বাটনে ক্লিক করে বেরিয়ে এলাম। অত:পর রিস্টার্ট দেয়ার পর বহুল প্রতিক্ষীত টাচপ্যাড পেলাম। দেরী না করে টু-ফিঙ্গার স্ক্রলিং চালু করে দিলাম।

রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২

ফায়ারফক্সে ফন্ট সেটাপ: ওপেনসুয্যে ১২.২

ইন্টারনেট ব্রাউজ করার জন্য ফায়ারফক্স আমাদের প্রিয় একটি ব্রাউজার। গতানুগতিক ফন্ট যদি পাল্টে নেয়া যায় তাহলে কেমন হয়? বিশেষ করে বাংলার জন্য, আর ইংরেজীর জন্য? সে কাজটিই আজ করবো। বাংলার জন্য ব্যবহার করবো সোলায়মানলিপি, ইংরেজীর জন্য অক্সিজেন। সোলায়মানলিপি ডাউনলোড করুন এই লিঙ্ক থেকে, তারপর ডাবল ক্লিক করে সিস্টেমের জন্য ইনস্টল করে নিন (দুইবার পাসওয়ার্ড দিতে হতে পারে)। অক্সিজেন ফন্ট ইনস্টল করার জন্য নিচের দুটো কমান্ড কপি-পেস্ট করুন টার্মিনালে। sudo zypper in git
git clone http://anongit.kde.org/oxygen-fonts ফন্ট ইনস্টল করা হয়ে গেলে ফায়ারফক্স চালু করুন। প্রেফারেন্সে গিয়ে কন্টেন্ট ট্যাব চালু করুন। এডভান্সে ক্লিক করে ফন্ট সেটাপ নিচের মতো করে দিন। ইংরেজীর জন্য বাংলার জন্য এবার দেখুন কেমন লাগছে বাংলা সাইটগুলো, পাশাপাশি ইংরেজী সাইটও দেখুন। পার্থক্য নিজেই বুঝতে পারবেন।

শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২

ওপনসুয্যে ১২.২ ইনস্টল পরবর্তী কাজের তালিকা



ওপেনসুয্যে ইনস্টল করার পর কি কি করা লাগে তা নিয়ে টেনশানে ভুগি আমরা অনেকেই। আমি নিজেও প্রায়ই কনফিউজ হয়ে পড়ি। কি ইনস্টল করবো, কি করবো না এসব নিয়ে গুগল মামাকে গুঁতানো হয় প্রায়ই। মামা যেসব হেল্প নিয়ে আসে তা কিছু কাজে লাগে কিছু আবার বাহুল্য বলে মনে হয়। তাই চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেই একটা লেখা লিখে ফেলি, “থিংস টু ডু আফটার ওপেনসুয্যে 12.2 ইনস্টলেশন”। লিখছি বাংলায়, ইংরেজী নাম কেন দেব? তা দিচ্ছিও না। বকর বকর না করে কাজের কথায় যাওয়া যাক। শুরুতে বলে রাখি এটা একান্ত আমার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে বানানো কাজের তালিকা। একেকজনের চাহিদা একেকরকম থাকা স্বাভাবিক, তাই সবার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব হয়নি।

প্রথম কাজ: রিপোজিটরি আপডেট

ইনস্টল করার পর সর্বপ্রথম কাজ ইন্টারনেট লাইন ঠিকমতো চলছে কিনা দেখা। আপনার ক্যাট5 ক্যাবল, কিংবা অপটক্যাল ফাইবার (যেটা আমি ব্যবহার করছি, হি হি), অথবা বাংলার সিংহের মডেম টেনেটুনে-টোকা দিয়ে দেখুন চলছে কিনা। সব ঠিক থাকলে আয়েশ করে পিসির সামনে বসুন।

ওপেনসুয্যে লগ-ইন করে কিক-অফ মেনু থেকে টার্মিনাল (কনসোল) খুলুন। নিচের লাইনগুলো পেস্ট করে দিন (Ctrl+Shift+v)। পেস্ট করে এন্টার চাপুন। পাসওয়ার্ড চাইলে রুটের পাসওয়ার্ড দিন। অপেক্ষা করুন কয়েক সেকেন্ড।
sudo zypper ar -f http://packman.inode.at/suse/openSUSE_12.2/ packman
sudo zypper ar -f http://opensuse-guide.org/repo/12.2/ libdvdcss

এরপর রিপো রিফ্রেশ করুন।
sudo zypper ref
অত:পর আপডেট দিন।
sudo zypper update

দ্বিতীয় কাজ: মাল্টিমিডিয়া

আপডেট শেষ হলে হয়তো ইচ্ছে হলো একটা গান শুনবেন। হার্ডডিস্কের মাইনকা চিপায় থাকা দুষ্টু ভিডিও দেখার শখও জাগতে পারে। তাহলে একটু সবুর করুন মশাই। কাজ আরো বাকি। মাল্টিমিডিয়া চালু করার জন্য নিচের কমান্ডগুলো পূর্বের নিয়মে কপি-পেস্ট করে টার্মিনালের কালো পর্দায় বসিয়ে দিন। এরপর এন্টার চেপে কিছু সময় অপেক্ষা করুন (এবার সময় বেশি লাগবে)।
sudo zypper in libdvdcss2 vlc libxine2-codecs libxine2-pulse k3b-codecs lame  gstreamer-0_10-ffmpeg gstreamer-0_10-plugins-bad  gstreamer-0_10-plugins-ugly gstreamer-0_10-plugins-ugly-orig-addon  w32codec-all MPlayer smplayer gstreamer-0_10-plugins-good libxine2  libdvdplay0 libdvdread4 libdvdnav4 xine-ui libmad0 libavutil51 sox  libxvidcore4 xvidcore libavcodec52 libavdevice52 libvlccore4 libvlc5 lsb  pullin-flash-player flash-player gstreamer-0_10-ffmpeg  gstreamer-0_10-fluendo-mp3 gstreamer-0_10-fluendo-mpegdemux  gstreamer-0_10-fluendo-mpegmux gstreamer-0_10-plugins-base  gstreamer-0_10-plugins-good-extra k3b vlc-aout-pulse libquicktime0  gstreamer-0_10-plugins-bad-orig-addon gecko-mediaplayer

কোডেক ইনস্টল হলো, আপনার প্রিয় ভিএলসি প্লেয়ারটাও ইনস্টল করা দরকার।
sudo zypper in vlc

আরেকটা মিডিয়া প্লেয়ার ইনস্টল করতে পারেন, সেটা হলো এসএমপ্লেয়ার।
sudo zypper in smplayer

ক্লেমেন্টাইন নামক একটা মিডিয়া প্লেয়ার অনেকের ভাল লাগতে পারে, গান শুনতে হলে এটা দারুণ কাজ দেয়।
sudo zypper in clementine

তৃতীয় কাজ: ইন্টারনেট

ইন্টারনেট ব্রাউজার হিসেবে ফায়ারফক্স দেয়া থাকে, আমি আবার মাঝে মাঝে গুগল ক্রোম ব্যবহার করি। আপনিও চেখে দেখতে পারেন গুগল ক্রোম নিচের লিঙ্কে গুঁতিয়ে।

আরেকটা ব্রাউজার, নাম তার ক্রোমিয়াম। আমার ভাল লাগে, ইনস্টল করতে পারেন গুগল ক্রোমের বিকল্প হিসেবে।
sudo zypper in chromium

অডিও-ভিডিও ডাউনলোড করার জন্য Kget, Ktorrent দেওয়াই আছে। এরপরেও প্রয়োজন হলে জেডাউনলোডার ইনস্টল করে নিতে পারেন। টরেন্টের জন্য ডেল্যুগে ইনস্টল করা যেতে পারে।
sudo zypper in deluge
চতুর্থ কাজ: অন্যান্য প্যাকেজ

আরো কিছু প্রয়োজনীয় প্যাকেজ ইনস্টল করে রাখা যায়।

অ্যাডব রিডার
sudo zypper in acroread
শাটার
sudo zypper in shutter
আইসো মাউন্ট করার জন্য AcetoneISO ইনস্টল করে নিন।
sudo zypper in acetoneiso

উইন্ডোজ ঘরানার অ্যাপ্লিকেশন চালানোর জন্য Wine ইনস্টল করতে পারেন। যা সফটওয়্যার সেন্টারে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। যারা ভাবছেন সফটওয়্যার সেন্টার আবাই কই থেকে উদয় হলো তাদের বলছি, ওপেনসুয্যের স্পেশাল একটা সাইট আছে ([url]http://software.opensuse.org[/url]); যেখানে কোন অ্যাপ্লিকেশনের নাম দিয়ে সার্চ দিলে ওয়ান-ক্লিক ইনস্টলার হাজির হয়। ডাউনলোড করে (ঘাবড়াবেন না, সাইজ অতি ক্ষুদ্র) ইনস্টল করতে হয় শুধু।



পঞ্চম কাজ: হার্ডডিস্ক অটো মাউন্ট

আপনার হার্ডডিস্কের শুধু একটি বা দুটি পার্টিশান লিনাক্সের জন্য বরাদ্দ রেখেছেন, বাকিগুলো একসেস করতে গেলে আবার পাসওয়ার্ড দিতে হয়। রাইটও করা যায় না। এসব অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে হলে নিচের পদ্ধতি অনুসরন করুন।

Yast → System → Partitioner  এ ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনার হার্ডডিস্কের বর্তমান অবস্থা ভেসে উঠবে একটি উইন্ডোতে। যে পার্টিশান মাউন্ট করতে চান তাতে রাইট ক্লিক করে Edit এ ক্লিক করুন। আরেকটি উইন্ডো খুলবে সেখান থেকে ছবির মতো মাউন্ট পয়েন্ট (/windows/DRIVE) ঠিক করে দিন।







এরপর ফিনিশে ক্লিক করে বের হয়ে আসুন। এভাবে সবকটি ড্রাইভ মাউন্ট করতে পারবেন।

শেষ কাজ: কেডিই আপগ্রেড (অপশনাল)

এই কাজ সম্পূর্ণ অপশনাল। চাইলে করতে পারেন। না চাইলে বাদ দিয়ে দিতে পারেন। কাজটা হলো কেডিই আপডেট। আমি যেহেতু সর্বশেষ ডিই ব্যবহার করতে চাই সেহেতু ওপেনসুয্যের সঙ্গে আসা কেডিই 4.8 এ চলছে না। নতুন কেডিই হলো 4.9; এটিতে আপগ্রেড করার জন্য নিচের দুটো রিপোজিটরি ইনস্টল করতে হবে।

sudo zypper addrepo http://download.opensuse.org/repositories/KDE:/Release:/49/openSUSE_12.2/KDE:Release:49.repo[/code]
[code]sudo zypper addrepo http://download.opensuse.org/repositories/KDE:/Extra/KDE_Release_49_openSUSE_12.2/KDE:Extra.repo

রিপোজিটরি ইনস্টল হয়ে গেলে যথারীতি রিফ্রেশ ও আপডেট।

sudo zypper ref
sudo zypper update

পরের ধাপে Yast → Software → Software Management এ ঢুঁ মারতে হবে।


নতুন উইন্ডোর View → Repositories এ ক্লিক করে কেডিই রিপোটি সিলেক্ট করতে হবে। তারপর Switch System Packages এ ক্লিক করে বর্তমান প্যাকেজগুলোকে নতুন রিপোতে নিয়ে নিন।



Accept করে দেখুন নতুন একটি উইন্ডো খুলেছে। OK ক্লিক করে কাজ করার অনুমতি দিয়ে দিন। সিস্টেম কেডিই 4.9 এ সুইচ করবে। এরপর রিস্টার্ট করলেই নতুন কেডিইতে প্রবেশ করবেন।

শেষ কথা

উপরে যে কাজের তালিকা লিখলাম তা শুধু আমার মতো করে। কারো হয়তো অভ্র ইনস্টল করা লাগতে পারে, কারো মডেমের ড্রাইভার। ওসব নাহয় পরে কোন এক সময় আলোচনা করা যাবে। আজ সাধারন কিছু কাজের তালিকা দিলাম যা ওপেনসুয্যেকে প্রতিদিনের কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলবে। আমি আশা করছি যারা লিনাক্স মিন্ট, উবুন্টু চালাচ্ছেন তারা অন্তত একটিবার হলেও ওপেনসুয্যে ইনস্টল করে দেখবেন। আমার যে অল্প কয় বছরের লিনাক্স ডিস্ট্রোর অভিজ্ঞতা তাতে ওপেনসুয্যের কেডিই ভার্সনটিকে সেরা কেডিই মনে হয়েছে। বাকিটুকু নিজেই যাচাই করে নিন।

শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১২

ওপেনসুয্যে 12.2: ভিডিও প্রিভিউ এনাবলের উপায়

ওপেনসুয্যে ইনস্টল করার পর হার্ডডিস্কের ভিডিওর প্রিভিউ দেখা যায় না। একগাদা ভিডিওর মাঝ হতে প্রয়োজনীয় ভিডিও বের করা কিঞ্চিৎ বিরক্তিকর। ডলফিন ফাইল ম্যানেজারে বাই ডিফল্ট অপশানটা ডিজেবল করা থাকে। একটাই কারণ, তা হলো প্রপাইটরি কোডেকের লাইসেন্সজনিত বাধা। তো ভিডিও প্রিভিউ এনাবল করতে হলে ধাপে ধাপে এগুতে হবে। একে একে দেখা যাক কি করা যায়।

প্রথম ধাপ

প্রথমেই প্রয়োজনীয় কোডেক ইনস্টল করে নিন। এজন্য নিচের কমান্ডগুলো টার্মিনালে পর্যায়ক্রমে দিন।
sudo zypper addrepo http://packman.inode.at/suse/12.2/packman.repo
sudo zypper addrepo http://www.opensuse-guide.org/repo/12.2/libdvdcss.repo
sudo zypper refresh
sudo zypper install libxine2-codecs k3b-codecs ffmpeg lame gstreamer-0_10-plugins-bad gstreamer-0_10-plugins-ugly gstreamer-0_10-plugins-ugly-orig-addon gstreamer-0_10-plugins-ffmpeg libdvdcss2

দ্বিতীয় ধাপ

Yast → Software Management এ ক্লিক করুন।




সার্চ বক্সে kde-mplayer লিখে সার্চ দিন। kde-mplayer-thumbnailer সিলেক্ট করে বাম পাশে টিক চিহ্ন দিন। ইনস্টল করুন।





তৃতীয় ধাপ

এরপর হোম ফোল্ডারে গিয়ে কনট্রোলে ক্লিক করে (রেঞ্চ আইকন) ডলফিন কনফিগারে প্রবেশ করুন। বাম পাশের জেনারেল অপশানে ক্লিক করে ডান পাশের প্রিভিউ ট্যাবে ক্লিক করুন। স্ক্রল করে নিচে নামুন, ভিডিও ফাইল থাম্বসে টিক চিহ্ন দিন। এরপর ওকে ক্লিক করে বেরিয়ে আসুন।



ব্যস, কাজ শেষ। এরপর ভিডিও ফোল্ডার ব্রাউজ করে দেখুন। প্রিভিউতে ক্লিক করলে ভিডিও ফাইলের প্রিভিউ দেখা যাবে।


বৃহস্পতিবার, ৯ আগস্ট, ২০১২

জিসম টু: মুভি রিভিউ (১৮+)


রমযান মাসে দিনের বেলায় ইদানিংকালের মুভি দেখা রিস্কী। রোযার ওজন কমে যেতে পারে। মুভিগুলোয় যেসব আইটেম দেখায়, মানে আইটেম গানে আইটেম বম্বদের নর্তন-কুঁদন। কখনো শিলার জওয়ানি, কখনো মু্ন্নির বদনাম হওয়ার কেচ্ছা, কখনো বা চিকনী চামেলীর ড্যান্স। এসব দেখে ঠিক থাকা দায়। ইদানিং নতুন ধারা শুরু হলো বলে, এতদিন যাদের চিনতাম পর্ণস্টার নামে তারা এখন বলিউডস্টার। যাদের ভিডিওর জায়গা হয় হার্ডডিস্কের চিপায় কোন ফোল্ডারে (অপ্রাপ্ত বয়স্কদের হিডেন ফোল্ডার) তাদের মুভি এখন বড় পর্দায়। আগ্রহ জাগা স্বাভাবিক। আমারো জেগেছে। তাই তো রিলিজ হওয়ার কয়েকদিনের মাথায় ডাউনলোড করে নিলাম বিখ্যাত ভারতীয় বংশদ্ভূত অ্যাডাল্ট ফিল্ম স্টার সানী লিওনের প্রথম সকল দর্শকের (!) জন্য উপযোগী ছবি “জিসম ২”; নামিয়ে দেখতেও বসে গেলাম। সানী লিওনে বলে কথা, যাকে দেখে এসেছি বার্থডে স্যুটে তাকে এখন দেখব ক্যাজুয়াল পোষাকে। ভাবতেই কেমন লাগছে। তাছাড়া জিসম নামের মধ্যে কাম-কাম ভাব। নামেও জিসম কামেও জিসম সানী। উঁহু, শুধু সানী বললে আবার ওমর সানী ভেবে বসবেন না যেন। ক্রিকেটপ্রেমীরা তাকে ইলিয়াস সানী মনে করলে লেখক নির্দোষ। সাধারন আম-জনতার কাছে সানী লিওনে অপরিচিত হবার সম্ভাবনা বেশি। অবশ্য বদলে দেবার অঙ্গিকারাবদ্ধ কিছু মিডিয়ার কল্যানে মিস সানী কিঞ্চিৎ হলেও পরিচিতা বটে। সে যাই হোক, মুভির ট্রেলারগুলো দেখেও আন্দাজ করা যায় মুভিতে মিস সানীর উষ্ণতা। বকর বকর বেশী হয়ে যাচ্ছে, আসল কাজ শুরু করি। রিভিউ অব জিসম-টু।


জিসম টু – সানী লিওনে 

ছবির শুরুতেই সাগর পাড়ে সানী লিওনের নগ্নপিঠের দৃশ্য ভেসে ওঠে। ব্যাকগ্রাউন্ডে শোনা যায় তার আত্মকথন। 

তার নাম ইজনা, সে একজন পর্ণস্টার। (ভাবার বিষয় জিসম টু’র গল্প কি আগেই তৈরী করা নাকি সানীকে চুক্তিবদ্ধ করার পরে প্লট বানানো হয়েছে। নাহয় এভাবে সরাসরি পর্ণস্টার শব্দটা ভারতীয় দর্শকের সাথে ঠিক যায় না।) ইজনা তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত। 

তার সাথে কোন এক নাইটক্লাবে ছয় মাস পূর্বে এক সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টের সাথে পরিচয় হয়, যে তাকে ভোগ করে এবং পরদিন নতুন মিশনের অফার দেয়। (একরাতেই এতদূর!) সানীকে নিয়ে সেই এজেন্ট উড়ে যায় শ্রীলঙ্কা, যেখানে সানীকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তার দায়িত্ব পেশাদার খুনি কবির উইলসনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আইনের হাতে তুলে দেয়া। কবির ছিল ইজনার প্রাক্তন প্রেমিক। ইজনাকে ছয় বছরের পুরনো প্রেম জোড়া দিয়ে কবিরকে ধোঁকা দিতে হবে। হাতিয়ে নিতে হবে তার ডাটা। ইজনা শুরুতে রাজি না হলেও একরাতের নাগর আয়ান তাকে বুঝিয়ে রাজি করায়। 

পরের কিছু ঘটনা স্রেফ যৌন সুড়সুড়ি দেয়া ছাড়া তেমন কিছু নয়। কয়েকটা গানের দৃশ্যে সানী লিওনের সঙ্গে কবিররূপী রনদীপ হুদার অন্তরঙ্গতা সদ্য গোঁফ ওঠা কিশোরের হৃদয়ে তরঙ্গ সৃষ্টিতে সক্ষম হলেও আমার কাছে তেমন ভাল লাগেনি। মনে হয়েছে বাড়াবাড়ি। একদিকে কবিরের সাথে প্রেমের নাটক, অন্যদিকে আয়ানের ইজনার প্রতি দূর্বলতা চিরায়ত বাংলা ছবি থুক্কু হিন্দী ছবির ত্রিভুজ প্রেমের গল্পকে মনে করিয়ে দেয়। ভালবাসার টানা-পোড়েনের মাঝে জ্বলতে থাকা ইজনা একসময় খুন করে বসে কবিরকে। কবির মৃত্যুর পূর্বে তাকে সতর্ক করে দেয় তথাকথিত সিক্রেট সার্ভিসের সম্বন্ধে। ইজনা হয়তো তাকে বুঝতে পারেনি, কিংবা বিশ্বাস করেনি। কিন্তু শেষ অঙ্কে কবিরের কথা ফলে যায়। আয়ানকে নির্দেশ দেয়া হয় ডাটাগুলো নিয়ে ইজনাকে হত্যার। আয়ান তার বসকে এমন কাজ করতে অস্বীকৃতি জানায়। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে আয়ানের হাতে খুন হয় তার বস। আয়ান সব খুলে বলে ইজনাকে। ইজনা ভুল বুঝতে পারে। সে চলে যেতে উদ্যত হয়। আয়ান তাকে বাধা দেয়, ইজনাকে গুলিও করে বসে আয়ান। 

সবুজ ঘাসের উপর লুটিয়ে পড়ে ইজনা, আয়ান এগিয়ে এলে তার বুকে কয়েকটি বুলেটের স্পর্শে শার্ট রাঙিয়ে দেয় ইজনা। শেষ হয় একজন পর্ণস্টারের গল্প।

ছবির গল্পে তেমন নতুনত্ব নেই, কিন্তু নতুনত্ব ছবির শিল্পী নির্বাচনে। আর রগরগে গানের চিত্রায়নে। সানীকে প্রায়ই দেখা যায় সংক্ষিপ্ত পোষাক পরে আছে। যে মেয়ে উদোম থাকতে পছন্দ করে সে যে কম পোষাক পরবে এতে বৈচিত্র নেই। দিনো মারিয়ার খরচও কমেছে এতে। প্রথম জিসমের নায়িকা বিপাশা বসুর এককালের প্রেমিক দিনো মোরিয়া প্রযোজক হিসেবে চমক দেখিয়েছে সানীকে নিয়ে। পর্ণস্টারকে নায়িকা বানিয়ে মুভি করার মত মানসিকতা সব প্রযোজকের থাকার কথা নয়। দিনো এদিক দিয়ে একটা ট্রেন্ড হয়তো শুরু করে দিল। ভবিষ্যতে ভারতীয় সিনেমায় প্রিয়া অঞ্জলী রাই, সাশা গ্রের পদার্পনও ঘটে যেতে পারে। সে পরের কথা, আপাতত জিসম ২ নিয়ে কথা বলি।
সানী লিওনের ঠোঁটে হিন্দী মানায়নি। কারণ সে নিজে হিন্দী পারে না। অন্য একজনের কণ্ঠে লিপসিং করেছে শুধু। প্রথম ছবি হিসেবে সানীর ভুলগুলো ক্ষমা করা যায়। আর রনদীপ হুদা ছিল সাবলিল। আয়ানের চরিত্র করা অরুণোদয় সিংকে অভিনয় সময় দিতে হবে, সে বোধহয় শরীর বানানোয় মন‌োনিবেশ বেশি করেছিল। বাকী চরিত্রগুলো গল্পের প্রয়োজনে এসেছে, সেগুলো অবলোকন না করলেও চলে। ছবিটিকে দুইভাবে দেখা যায়। এক, সানী লিওনের জন্য। দুই, জিসমের সিকুয়েলের জন্য। প্রথম ক্ষেত্রে সানীর শারীরিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবেন অনেকেই। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আপনাকে হতাশ হতে হবে। প্রথম জিসমে বঙ্গ ললনা বিপাশা বসু শ্যামবর্ণ নিয়েও যে জিসম দেখিয়েছিল সানী তা পারেনি। হয়তো পয়লা ছবি বলে, কিংবা বিপাশা বসুর আবেদন দর্শকের কাছে বেশী বলে। প্রথম জিসমের গানগুলো ছিল সুপার হিট, এই জিসমের গান হিট না হলেও গানের মিউজিক ভিডিওগুলো অনেকের জন্য ঠান্ডায় গরম হবার প্রভাবক।
সবশেষে বলতে পারি জিসম-২ যতোটা আলোচিত ছিল সানী লিওনের অন্তর্ভূক্তিতে, ততোটাই সমালোচিত হবে দূর্বল চিত্রনাট্যের জন্য। খাপছাড়া গল্প, অপ্রয়োজনীয় সুড়সুড়ি মার্কা দৃশ্য, আনকোরা সহ-নায়ক আর নায়িকা ছবিটাকে ফ্লপের খাতায় নিয়ে গেছে এরই মধ্যে। আবার পূজা ভাট (ছবির পরিচালক) জিসম-৩’র ঘোষণা দিয়ে বসেছেন। সেখানে আসছে নাটালিয়া কাউর। সে হচ্ছে গিয়ে আইটেম গার্ল, নায়িকারূপে আনতে যাচ্ছে ভাট পরিবার। এখন দেখার বিষয় হবে তা কেমন হয়। ওসব নাহয় পরে ভাবা যাবে, আপাতত সানীর বলিউড ভবিষ্যত নিয়ে মন্তব্য করা যায়। টিকে থাকতে হলে এই রমণীকে হিন্দী আয়ত্ত্ব করতে হবে, যতোই সে শরীরে ভাঁজ, ভাঁজে থাকা যৌবন দেখাক না কেন। আর যদি সুস্থ বিনোদন চান, তাহলে জিসম টু দেখার চিন্তা বাদ দিন। মনের কোণে যদি বদ খেয়াল চাপে তাহলে দেখে নিতে পারেন সানী লিওনের জিসম (২)। এসব কিছুই না হলে রিভিউ দেখেই কেটে পড়ুন, সানী লিওনের অন্য ভিডিও দেখে এরচেয়েও মজা পাবেন।

পরিশেষে সানী লিওনের একটা ভিডিও দিলাম। আবার কথা হবে, ব্লগে কিংবা ফোরামে। তদ্দিন ভাল থাকবেন।

শনিবার, ২৮ জুলাই, ২০১২

লেখক হুমায়ূন আহমেদ বনাম ব্যক্তি হুমায়ূন


আমি অত্যন্ত সাধারন এক পাঠক, অনিয়মিত পাঠক। নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকে পড়া হয় বছরে একবার। বইমেলার সময়। বাকি সময় পরলে ল্যাপটপের মনিটরে চোখ রেখে (কিন্ডল ফায়ার কেনার শখ হয়নি কখনো)। সেরকম একজন পাঠক হিসেবে হুমায়ূন আহমেদের মত জনপ্রিয় সাহিত্যিকের সমালোচনা আমার সাজে না। আমি করতেও চাই না। যা চাই তা হলো নিজের কিছু কথা বলতে।

হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের সাহিত্যে স্মরণীয় নাম হয়ে থাকবেন তার সৃষ্টিশীল সাহিত্যের জন্য। তার গল্পে ফুটে উঠতো সাধারন পরিবারের কথা, বেকার প্রেমিকের কথা, পরিস্থিতির চাপে পড়া যুবকের কথা। কিংবা সদ্য তরুণী হওয়া মেয়ের কথা। তার ভাষা ছিল ঝরঝরে। এত সহজ ভাষা যা পড়ে মনে হতো, আরে এমন লেখা আমিও লিখতে পারি। সেরকম সাহিত্যিক ছিলেন তিনি। সেই মানুষটা চলচ্চিত্র পরিচালনায় এসে নিজের সাহিত্যকর্মের বারোটা বাজাতে শুরু করলেন। তার জীবনের শেষ দশ বছরে অধিকাংশ উপন্যাস পরিণত হয়েছে অপন্যাসে। কথাটা অনেকে স্বীকার করবেন। তবুও কিছু ভাল লেখা এই সময়ে পাওয়া গেছে। যেমন – মধ্যাহ্ন, মাতাল হাওয়া, জোছনা ও জননীর গল্প ইত্যাদি। তবে তার ভাল লেখাগুলো সত্তর থেকে নব্বই এই তিন দশকের মধ্যে লেখা। মিসির আলী, হিমু, শুভ্র এই তিনটি চরিত্রের জন্ম এই সময়ে। মিসির আলী চরিত্রের জন্ম তিনি যখন আমেরিকায় পিএইচডি করছেন তখন। দেবী, নিশিথীনি নামক দুটো উপন্যাসের মাধ্যমে নতুন এক চরিত্রের জন্ম হয় বাংলা সাহিত্যে। মিসির আলী। পরবর্তীতে হিমুর উত্থান ঘটে ময়ূরাক্ষী উপন্যাসে। সুন্দর, সুদর্শন শুভ্রের দেখা পাওয়া যায় নব্বইয়ের শুরুতে। হুমায়ূনের নাটক লেখার দক্ষতায় ততোদিনে বোকা বাক্সের দর্শক দেখে ফেলেছে এই সব দিনরাত্রি, বহুব্রীহি, অয়োময়, কোথাও কেউ নেই, নক্ষত্রের রাত, আজ রবিবারের মতো নাটক। ঈদের অনুষ্ঠানও তার নাটক ছাড়া জমতো না।
 
হুমায়ূন আহমেদ তার পরিবার নিয়ে সুখী ছিলেন। অন্তত বাইরে থেকে তাই মনে হতো। কিন্তু তার সংসারেও যে আগুন জ্বলছিল তা কে জানতো। তিন মেয়ে, এক ছেলে আর মায়াবতী স্ত্রী নিয়ে সংসার তার। নব্বই দশকের শেষের দিকে তার মেঝো মেয়ের বান্ধবী কিশোরী শাওনের সাথে তিনি জড়িয়ে পড়েন অনৈতিক সম্পর্কে। নূহাশপল্লী নামক বাগানবাড়ীতে প্রায় চার বছর লিভ টুগেদার করেন শাওনের সাথে। তখনও তার প্রথম স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়নি। মিডিয়ায় সব প্রকাশ হয়ে পড়ায়, শাওনের পরিবারের চাপে পড়ে ৩০ বছরের সংসার একটা স্বাক্ষরে তছনছ করে দিলেন হুমায়ূন। সেই শুরু। তার লেখা নাটক, গল্প, উপন্যাস হয়ে পড়তে লাগলো রসহীন, স্বস্তা। আমি নিজেই তার নাটকের দর্শক ছিলাম, কিন্তু শেষের দিকে আগের সেই মজা পাচ্ছিলাম না। গল্পগুলোও কেন যেন জমাট বাঁধাতে পারেননি হুমায়ূন আহমেদ। হয়তো নৈতিক স্খলনের সাথে সাথে তার লেখক স্বত্তার অপমৃত্যু ঘটেছিল। সাথে ছিল প্রকাশকদের চাপ, ঈদের নাটক, ঈদ সংখ্যার গল্প-উপন্যাস, বইমেলায় বেস্ট সেলার হওয়ার আকাঙ্খা। এত চাপের পাশে ছিল (হয়তো) পারিবারিক চাপ। যে চাপ তাকে বইতে হয়েছে জীবনের শেষ দশকে। সবার সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হতে ক্যান্সার নামক মরণব্যাধীতে আক্রান্ত হলেন হুমায়ূন। জীবনও শেষ হলো তার এই রোগের চিকিৎসাকালীন সময়ে।


আমি তার সমালোচনা করতে চাই না। এসব তার জীবনে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনার কিছু মাত্র। মানুষটার মৃত্যু হয়েছে। তিনি কোন সমালোচনার জবাব দিতে পারবেন না। অনেকের জীবনে অন্ধকার দিক থাকে, আবার শাদা-আলোকিত দিকও থাকে। হুমায়ূন আহমেদের উজ্জ্বল অধ্যায় তার সাহিত্যকর্মের প্রথম তিরিশ বছর। যখন তার পাশে ছিলেন প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন খান (আহমেদ)। আমরা তার সেই কাজগুলোর জন্য তাকে সম্মান জানাই, কি দরকার তার জীবনের কলুষিত অধ্যায়গুলো ঘাঁটার? এসব কাদা বেশি ঘাঁটালে যে শ্রদ্ধাটুকু তাকে করছি সেটুকোও যে তিনি হারিয়ে বসতে পারেন। সে খেয়াল কি আছে তার “ক্রেজি” ভক্তদের ?

Like us on Facebook