Ads 468x60px

শনিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১১

একটি ব্যাঙের গল্প ও আমরা

ইদানিং আমরা নিজের স্বত্তা ভুলে যাচ্ছি। অন্যকে নিয়ে মাতামাতি বেশী করছি। এই তো গত বছর ডিসেম্বর মাসে আর্মি স্টেডিয়ামে টাকার বিনিময়ে নাচানাচি করে গেলেন শাহরুখ খান, রানী মুখার্জি, অর্জুন রামপাল প্রমুখ। বাংলাদেশী দর্শকরা তাদের দেখার জন্য মাটিতে পর্যন্ত বসে পড়েছিল। এতে চাচা-কাকা জাতীয় মানুষজন ছিলেন এবং তারা মাঠে বসে এসব ভিনদেশী নাচ দেখেছেন। আমার অবাক লাগে সংক্ষিপ্ত পোষাকের মেয়েগুলোকে লুল জাতীয় পুরুষের মতো সেসব চাচারা অপলক নয়নে দেখেছেন। পাশে ভাতিজা টাইপের ছেলেগুলোও তাদের দেখছিল। লজ্জা লজ্জা, আমার লাগলেও তাদের লাগেনি। এটাই বড় লজ্জার। এখন শুনছি বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে আবার এরকম অনুষ্ঠান হবে ঢাকায়। তাতে নাকি আরো বড় চমক থাকবে। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, ক্যাটরিনা কাইফ, ম্যালাইকা অরোরা খান আসবেন। তাদের পোষাক কেমন হয় তা নিশ্চয় সচেতন পাঠক জানেন। গরমকালে তাদের যেমন গরম বেশী লাগে তেমনি আবার শীতকালেও তাদের গরম লাগে। তাই পোষাক সংক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এখন মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে তারা যদি নাভী দেখিয়ে, বুকের খাঁজ দেখিয়ে মুরুব্বিদের সামনে নাচেন এবং সাথে দর্শক সারিতে জোয়ান পোলাপানও থাকে তাহলে তা আমাদের জন্য হবে অত্যন্ত অপ্রীতিকর। সব পুরুষই এসব অভিনেত্রীরূপী নর্তকীদের দেখবে পাড়ার ইভটিজারের দৃষ্টিতে। সে ভুলে যাবে প্রিয়াঙ্কার মতোই তার একটা বোন আছে, কিংবা আছে একটা মেয়ে।

আমরা একদিকে লোকজনকে মেয়েদের কটূ কথা বলায় গালাগাল করি। আবার আমরাই ম্যালাইকা অরোরার “মুন্নি বদনাম হুয়ি তেরে লিয়ে” দেখে নিজেকে মুন্নির বদনামকারী ভাবি। দ্বৈতরূপে আমাদের জুড়ি মেলা ভার। নিজের সংস্কৃতি বিসর্জন দিয়ে ক্যাটরিনা কাইফের “শিলা কি জওয়ানি” নিয়ে মশগুল থাকি। এসব গান না বাজালে মনে হয় জাতে ওঠা যায় না। তাই তো এসব স্বস্তা হিন্দী গান বাজাতে বাজাতে, বেসুরো গলায় গাইতে গাইতে নিজেদের জাতে তুলি।

কয়দিন আগে একজন জনপ্রিয় লেখকের একটা কলামে একটা গল্প পড়লাম। সেটা দিয়েই শেষ করি।

একটি পানশালায় একজন লোক এসে বলল সে ম্যাজিক দেখাবে। যেহেতু তার কাছে অর্থ নেই তাই ম্যাজিকের বিনিময়ে মদ চাইছে। ম্যানেজার রাজি হয়ে গেল। লোকটি একটি ইঁদুর বের করলো, টেবিলের উপর রাখতেই সে নাচতে লাগলো। ম্যানেজার খুশি হয়ে তাকে মদ দিলো। পরেরদিন সে আবার এলো, আবার ম্যাজিক। এবার সে একটি ব্যাঙ বের করলো। ব্যাঙটি গান গাইতে লাগলো। এটা দেখে এক লোক ব্যাঙটি কেনার জন্য দরদাম শুরু করলো। ভালো দামে ব্যাঙটি কিনে নিল লোকটি। ম্যাজিশিয়ানকে এবার ম্যানেজার জিজ্ঞাসা করলো কেন সে গান গাওয়া ব্যাঙটি বেচে দিল ? ম্যাজিশিয়ান বললো ব্যাঙটি গান গায়নি। গেয়েছে ইঁদুরটি, ব্যাঙটি লিপসিং করেছে শুধু। তাই ব্যাঙের দাম তার কাছে নেই। সেজন্য ব্যাঙটি বেচে দিয়েছে।

এখন আমরাও মনে হয় তেমন হয়ে যাচ্ছি। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে ব্যাঙই আনছি, যার আসলেই কোন মূল্য নেই।

3 মন্তব্য(গুলি):

নিশাচর বলেছেন... Best Blogger Tips

সংস্কৃতির নিয়ত পরিবর্তন ঘটে। তবে অপসংস্কৃতির হাত থেকে আমাদের সমাজকে রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। নাচ-গান এসব তাদের দেশেও হয়। নিজেদের নৈতিক অবক্ষয় যেন না হয় তা আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত।

t@req বলেছেন... Best Blogger Tips

এটাই তো সমস্যা ভাই, আমাদের মেলায় ভারতীয় গান কেন বাজাব ? তাদের নায়িকাদেরই বা কেন আনতে হবে ? জেমস বা আইয়ুব বাচ্চুর কনসার্টেও প্রচুর মানুষ হয়, তাহলে তাদের দিয়ে কনসার্ট করালে দোষ কি ? তাই নিজেরা কতটা সচেতন থাকতে পারবো সন্দেহ আছে।

Supriya বলেছেন... Best Blogger Tips

বাংলা কবিতা bangla kobita https://kobikolpolota.in

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Like us on Facebook