জেমস
বন্ডের আগের সেই জৌলুশ আর নেই।
সহকারী নারী এজেন্টের গুলি
খেয়ে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে
নদীতে পড়ে যায় মিস্টার বন্ড।
এদিকে মৃত বন্ডের শোক ভুলতে
না ভুলতেই ছয়জন এজেন্টকে হারায়
এমআই সিক্স। কিংকর্তব্যবিমূঢ়
এমের সামনে হঠাৎ হাজির হয়
বন্ড। মাতাল, দুর্বল
জেমস বন্ডকে বাধ্য হয়ে নতুন
মিশন দিতে রাজি হয় এম। সবগুলো
টেস্টে ফেল করা বন্ড মিথ্যাকে
সত্য ভেবে নতুন উদ্যোমে শুরু
করে তার মিশন। মিশনে তার সাথী
হয় তাকে গুলি করা সেই এজেন্ট।
শারীরিকভাবে অক্ষম,
মানসিকভাবে
শক্ত বন্ড ছুটে চলে ভয়ঙ্কর
ভিলেন সিলভার সন্ধানে। একটা ওয়ালথার পিপিকে যা আবার বন্ড ছাড়া কেউ আনলক করতে পারবেনা হলো কিউর দেয়া তার একমাত্র গ্যাজেট।
এতক্ষণ
যা বললাম তা হলো সম্প্রতি
মুক্তি পাওয়া জেমস বন্ড সিরিজের
নতুন ছবি 'স্কাইফল'
– এর কাহিনীর
সারসংক্ষেপ। গত ৮ই ডিসেম্বর,
২০১২ তারিখে
বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে
দেখে এলাম ছবিটি। ছবিতে একশানের
অভাব নেই, গ্যাজেট
দেখা যায়নি আগের মতো। পুরনো
কিউকে মিস করেছি। বন্ডকে
মানবিক রূপ দেয়ার চেষ্টা খুব
যে সফল হয়েছে বলা যাবে না। তবে
অভিনেতা ডেনিয়েল ক্রেইগ চেষ্টা
করেছেন তার সেরাটা দিতে। ছবিতে
কিছু অযৌক্তিক দৃশ্য ছিল,
মাথা না
খাটিয়ে দেখলে সেটা ধর্তব্যের
বিষয় না।
বন্ড গার্ল বেরিনিস
মার্লোহ'র
সাথে বন্ডের দৃশ্য জমেনি,
তার চরিত্রের
ব্যপ্তি হতাশা বাড়িয়েছে।
ভিলেন চরিত্রে জেভিয়ার বার্ডেম
মানিয়ে গেছেন, তাকে
দেখলেই 'নো
কান্ট্রি ফর দ্য ওল্ড ম্যান'
ছবির শীতল
মস্তিষ্কের সেই খুনীর কথা
মনে পড়ে। এম চরিত্রে জুডি
ডেঞ্চ বরাবরই ভালো।
ছবির
শেষে একটা টুইস্ট আছে বন্ডের
বস বিষয়ক, আর
আগমন ঘটে মিস মনিপেনির। ঠিক
যেন প্রথম বন্ড ছবির আগের
পর্ব। হঠাৎ বুকে শূণ্যতা
সৃষ্টি হয়েছিল, পঞ্চাশ
বছর আগের শ্যন কনারিকে যদি
বর্তমানের হাই ফাই গ্যাজেটে
সমৃদ্ধ বন্ডরূপে দেখা যেত !
শ্যন
কনারীকে তো আর সেভাবে দেখা
যাবে না, তবে
পিয়ার্স ব্রসনানকে নিয়ে আরেকটা
বন্ড করা যেত। ডেনিয়েল ক্রেইগের
জায়গায় ব্রসনান থাকলে আমি
নিশ্চিত ছবি আরো জমতো। আদর্শ
আধুনিক বন্ড বলতে পিয়ার্স
ব্রসনানের চেহারাই ভেসে ওঠে
চোখের পর্দায়, আফসোস
নির্মাতারা বয়সের অযুহাতে
অন্যতম সেরা বন্ডকে অকালে
শেষ করে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে
হয়তো ব্রসনানকে ছাড়িয়ে যাবেন
নতুন কোন অভিনেতা।
মুভিটি
দেখতে পারেন, তবে
খুব আশা নিয়ে দেখলে হতাশ হবেন।
যদি এটি বন্ড সিরিজের মুভি
না হয়ে সাধারন একশান মুভি হতো
তাহলে দর্শকপ্রিয় হতো কিনা
সন্দেহ হয়। শুধুমাত্র বন্ড
ট্যাগের জন্য স্কাইফল দেখা
যায়, আর
ফরাসী সুন্দরী বেরিনিস মার্লোহ'র
জন্য। তাছাড়া বড় পর্দায় একশান
মুভি দেখার মজা নেয়ার জন্যও
দেখা যায় স্কাইফল। বিদেশী
মুভি দেখার চেয়ে আমি পরামর্শ
দেব দেশীয় মুভি দেখুন। স্টার
সিনেপ্লেক্সেই চলছে রেদোয়ান
রনির “চোরাবালি”; স্কাইফল
না দেখে রনির ছবি দেখলে হতাশ
হবেন না। অন্তত দেশীয় চলচ্চিত্রকে
চোরাবালিতে ডুবে মরতে না দিয়ে
বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করলে
ক্ষতি কি ?