বাংলা
ছবি তেমন দেখা হয় না। ফাঁকতালে
যা দেখি তা হলো কলকাতার ছবি।
নাহয় ভারতবর্ষের ছবি দেখিনা।
হিন্দী ছবি দেখা বাদ দিয়েছি
মেলা আগে। ফেসবুক, ফোরামে
প্রলয় ছবিটা নিয়ে নাম শুনছিলাম
খুব। তাই নামিয়ে নিলাম দেখবো
বলে।
ছবির
শুরুতেই দেখা যায় এক অসহায়
পিতা তার ধর্ষিতা মেয়ের প্রতি
অন্যায়ের বিচারের জন্য থানায়
থানায় ঘুরছেন। কেউই তার কেস
নিচ্ছে না, সমাজপতিরা
দায়ী বলে। এতে অন্যায়কারীদের
সাহস বেড়ে যায়। তারা কুকর্ম
করে চলে, এমনকি
মায়েরাও বাদ যায় না তাদের
পাশবিকতার ছোবল হতে। এমনি
সময়ে আবির্ভাব সৎ স্কুল শিক্ষক
বরুণ বিশ্বাসের। আর দশজন
তরুণের মতো সেও স্বপ্ন দেখে
স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার,
সমাজের নষ্ট
ঘুনে ধরা রাজনীতির ভয়াল
থাবামুক্ত থাকার। বরুণ মার
দিতে চায় অন্যভাবে। কলম দিয়ে,
শিক্ষা দিয়ে,
নীতিবাক্য
দিয়ে মারতে চায় বরুণ সেই
নষ্টদের। জাগরন মঞ্চের আবির্ভাব
ঘটে ধর্ষনের প্রতিবাদে। বরুণরা
প্রায়ই যা চায় তা পায় না। সমাজে
এমনই দেখা যায়। সিনেমায়ও তাই
দেখলাম। বরুণের ভালো বন্ধু,
অন্যায়ের
প্রতিবাদে সহযাত্রী মেয়েটাও
শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারে না
পশুর লালসার কাছে। সেই বরুণ
ক্ষেপে ওঠে, এবার
সে জেলে ঢুকিয়ে ছাড়ে ধর্ষককে।
আইনের মারপ্যাচ, ক্ষমতার
জোরে বেশিদিন জেলে থাকতে হয়নি
ধর্ষকদের। জেলে থেকেই ওরা
সরিয়ে দেয় বরুণকে, দূর
করে দেয় তাদের নীতিবান
প্রতিপক্ষকে।
সিনেমা
শেষ? উঁহু,
এত সহজ নয়।
মাত্র তো ইন্টারমিশন,
গল্পের শেষাংশ
যে এখনো বলা হয়নি। বরুণের পথ
ধরে আবির্ভাব ঘটে কলকাতার এক
স্কুলের হেডমাস্টার বিনোদ
বাবুর। তিনি বুঝতে পারেন না
কেন বরুণের মতো ছেলেকে অকালে
মরতে হলো, তারই
ছাত্রের হাতে। তিনি কি পারবেন
সমাজপতিদের টুঁটি চেপে ধরতে?
জানতে হলে
দেখুন প্রলয়। খারাপ লাগবেনা,
আমি ওপার
বাংলার সিনেমা দেখে আক্ষেপে
পুড়ি মাঝে মাঝে। আমাদের দেশে
কেন গল্পের প্রতি নজর দেয়া
হয় না? আমরাও
তাহলে দূর্দান্ত কিছু মুভি
দেখতাম।
ছবিতে
বরুণের চরিত্রে পরমব্রত দারুণ
করেছে। পরান বন্দোপাধ্যায়,
মিমি চক্রবর্তী,
শ্বাশ্বত
চ্যাটার্জি কিংবা ধর্ষক
চরিত্রে রুদ্রনীল সবাই যার
যার চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছে
পরম দক্ষতায়। রাজ চক্রবর্তী
একাধারে পরিচালক, স্ক্রীপ্ট
রাইটার। বোঝেনা সে বোঝেনা,
কানামাছির
মতো মুভিও এই রাজের কাজ।
সিনেমায়
শুধু নাচ-গান
দিলে হয় না, গল্পটাও
যুৎসই হতে হয়। দাদারা তা বারবার
করছে, আমরা
ডিজিটালের নামে প্রহসন না
করে ভালো গল্প নিয়ে কাজ করলে
মানুষ হলে যাবে। একবার নয়,
একাধিকবার
যাবে। গল্প ভালো হলে প্রযুক্তি
কোন ব্যাপারই না।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন